কাটা গাছে কাফন পরিয়ে জাবিতে বিক্ষোভ

|

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ছেলেদের হল নির্মাণের স্থলে গাছ কাটা শুরু করলে শিক্ষার্থীদের বাধায় তা পণ্ড হয়ে যায়।

শুক্রবার সকালে নির্মাণ কোম্পানির শ্রমিকরা বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের দক্ষিণ ও পূর্বপাশের শতাধিক গাছ কাটার পর শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়।

গাছ কাটার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তাৎক্ষণিক প্রক্রিয়ায় বিকাল সাড়ে ৩টায় কাটা গাছের গুড়িতে কাফনের কাপড় মুড়িয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের সামনে থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাস ভবনে গিয়ে শেষ হয়।

সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ‘অপরিকল্পিতভাবে’ গাছ কাটার কড়া সমালোচনা করেন। বিক্ষোভের আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের সামনে একটি প্রতিবাদী পথ নাটক প্রদর্শন করেন জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার।

সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রায়হান রাইন।

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যখন অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে তখন সব কিছুতে ভয়ে থাকে। আমরা

জানতে পেরেছি এই উন্নয়ন কাজের টাকা ভাগাভাগির ব্যাপারে যখন সাংবাদিকরা জেনে যায় তখন তাদেরকে ভয়ভীতি দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। শোকের মাসে ছাত্রলীগ এ দেশের গরীবের টাকা লুটপাট করতে উঠে পড়ে লেগেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা উপাচার্যকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই এই উন্নয়ন কাজের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত না নিয়ে এই অপরিকল্পিত উন্নয়ন কাজ ভবিষ্যতের জন্য উন্নয়ন বয়ে আনাবে না।

এর আগে উন্নয়ন কাজের শুরু থেকে কাজকে ‘অপরিকল্পিত’ অ্যাখ্যা দিয়ে তা বন্ধের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে তাদের আন্দোলনকে উপেক্ষা করে কাজ চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এদিকে শুক্রবার বিকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখা এই উন্নয়ন পরিকল্পনাকে ‘অপরিকল্পিত ও অস্বচ্ছ’ আখ্যা দিয়ে এই উন্নয়ন কাজ বন্ধ করার আহ্বান জানায়।

গত ২২ জুলাই মেয়েদের হল নির্মাণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের টারজান পয়েন্টে কাজ শুরু করে সংশ্লিষ্ট নির্মাণ কোম্পানি। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের বাধায় তা পণ্ড হয়। এরপর উপাচার্য অধ্যাপক ফারজান ইসলাম আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের দাবিকে বিবেচনা করে দেখবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply