আত্মহত্যাকে যন্ত্রণাহীন করতে অভিনব যন্ত্র!

|

আত্মহত্যা মহাপাপ। কিন্তু ইদানিং তা আর মানছে ক’জন। আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে আত্মহত্যার প্রবণতা। এই প্রবণতার সুযোগে আবার কেউ কেউ একে নিয়ে ব্যবসাও ফেঁদে বসেছেন। তেমনই একজন অস্ট্রেলিয়ার ডা. ফিলিপ নিৎসকে। সম্প্রতি তিনি তৈরি করেছেন অভিনব এক ‘সুইসাইড ডিভাইস’, যা কিনা মানুষকে দেবে যন্ত্রণাহীন মৃত্যুর নিশ্চয়তা।

সারকো নামের যন্ত্রটি দেখতে অনেকটা মহাকাশযানের মতো। এতে অন্য গ্যালাক্সিতে না যাওয়া গেলেও, নিৎসকের মতে এর যাত্রীর পরলোকে পাড়ি জমাবেন নির্বিঘ্নেই। যন্ত্রটির ভেতরে নিচের অংশে একটি বোতলে তরল নাইট্রোজেন থাকে। এর ওপরে থাকে হেলান দিয়ে শোবার মতো একটি সিট। আর আছে একটি টাচপ্যাড। যন্ত্রটি ব্যবহারে আগ্রহীদের অনলাইনে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। সদুত্তর দিতে পারলে মিলবে ওই ক্যাপসুলে প্রবেশের কোড। ক্যাপসুলে প্রবেশ করে বোতাম চেপে, কিংবা মৌখিক নির্দেশেই চালু হয়ে যাবে সারকো। তরল নাইট্রোজেনে ভরে উঠবে ক্যাপসুল, দ্রুত কমে যাবে অক্সিজেনের পরিমাণ। মিনিটখানেকের মধ্যে অক্সিজেন এতোটাই কমে যাবে যে, ভেতরে থাকা মানুষটি সংজ্ঞা হারাবে। সংজ্ঞাহীন অবস্থাতেই তার মৃত্যু ঘটবে।

থ্রি ডি প্রিন্টারে প্রিন্ট করে যে কেউই এই ডেথ ক্যাপসুল তৈরি করতে পারবে। সারকোর ব্লু প্রিন্ট বিনামূল্যে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। উদ্ভাবকরা বলছেন, থ্রি ডি প্রিন্টারে যন্ত্রটি তৈরি করতে ১২শ ডলার খরচ পড়বে।

স্টাইলিশ সুইসাইড মেশিন তৈরি করে নিৎসকে সবাইকে চমক দিতে চাইলেও, অনেকেই এতে নাখোশ। চিকিৎসাবিদরা বলছেন, এটা নৈতিকতা বিবর্জিত এবং মানুষের জন্য অমঙ্গলজনক। তারা বলছেন আত্মহত্যাকে মহিমান্বিত করার চেষ্টা করেছেন নিৎসকে।

১৯৯৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার নর্দান টেরিটরিতে ইনজেকশনে আত্মহত্যাকে বৈধ হওয়ার পর পৃথিবীর প্রথম চিকিৎসক হিসেবে নিৎসকে ৪ জনের আত্মহত্যার তত্ত্বাবধান করেন। এরপর তিনি আত্মহত্যার বৈধতা আদায়ে একটি এনজিও খোলেন, যার নাম দেন “এক্সিট ইন্টারন্যাশনাল”।

অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যেও বৈধতা পেয়েছে ইনজেকশন দিয়ে আত্মহত্যা। তবে ১৮ বছরের বেশি কোন ব্যক্তি যদি এমন কোন রোগে আক্রান্ত হন, যাতে তার ৬ মাসের বেশি বাঁচার সম্ভাবনা নেই, তখনই এই ইনজেকশন ব্যবহার করা যাবে। অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, কানাডা, কলম্বিয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু রাজ্যে স্বেচ্ছা মৃত্যুকে বৈধতা দেয়া হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply