৭ম শ্রেণীর ছাত্রীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

|

জয়পুরহাট প্রতিনিধি:

জয়পুরহাটের জামালগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী মনিরা আক্তার ময়নাকে টিসি দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জামালগঞ্জ বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে অভিভাবক ও স্থানীয়রা।

এসময় বিক্ষোভকারীদের দ্বারা ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আক্কেলপুর পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর লাঞ্ছিত হয়েছেন। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জানা গেছে, গত বুধবার জামালগঞ্জ স্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ময়না আক্তার বাড়ি থেকে টিফিন না আনায় স্কুল থেকে হোটেলে গিয়ে টিফিন সেরে আসতে ১৫ মিনিট দেরী হওয়ায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক রানা কুমার মণ্ডল ওই ছাত্রীকে তিরস্কার করে ক্লাস থেকে বের করে দেন। সেই সাথে তার মা সুলতানা পারভিনকে ফোন কলে স্কুলে ডেকে নিয়ে তার মেয়েকে টিসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান এবং মা মেয়েকে স্কুল থেকে বের করে দেন।

ওই দিন সন্ধ্যার দিকে বিদ্যালয়টির অফিস সহকারী আলম হোসেন জামালগঞ্জ বাজারে গেলে ওই ছাত্রীর পক্ষে স্থানীয়রা তার কাছে জানতে চান ছোট একটা বিষয়ে কেন ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হচ্ছে এসময় উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ধস্তাধস্তি হয় এবং আলম মাটিতে পড়ে গেলে সামান্য আহত হয়ে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়।

এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রানা কুমার মণ্ডল ও কমিটির সভাপতি গোলাম মাহাফুজ চৌধুরী বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ওই ছাত্রীর টিসি দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার পক্ষে মিছিল করার প্রস্তুতি নেয়।

অপরদিকে ছাত্রী বহিষ্কারের প্রতিবাদে অভিভাবক ও এলাকাবাসীও জামালগঞ্জ বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শেষে স্কুলে যায় এবং সভাপতির নেতৃত্বে বের হতে যাওয়া মিছিলে বাধা দেয় এবং উপস্থিত এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা সভাপতিকে লাঞ্ছিতও করা হয়। ওই দিন বিকেলে রুকিন্দিপুর গ্রামে স্থানীয় অভিভাবকরা আবারো বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে।

এ বিষয়ে স্কুলের সভাপতি অবসর চৌধুরী জানান, টিফিনের সময় ওই ছাত্রী স্কুল থেকে বেরিয়ে যায়। ১ঘন্টা পর এক ছেলে মটর সাইকেলে করে স্কুলের সামনে নামিয়ে দিয়ে যায়। এই কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আহসান কবির বিপ্লব জানান, মেয়েটি শারীরিকভাবে দুর্বল। বাড়ি থেকে খাবার না নিয়ে যাওয়ায় সে স্কুলের কাছে হোটেলে খাবার খেতে যায়। ক্লাস শুরুর মাত্র ১৫মিনিট দেরী হওয়ায় তাকে টিসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তার মাকে ডেকে নিয়ে অপমান করে স্কুল থেকে বের করে দেয়। এর প্রতিবাদে স্থানীয় জনগণ বিক্ষোভ মিছিল ও মানব বন্ধন করেছে।

বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থী মনিরা জানায়, বিনা কারণেই প্রধান শিক্ষক তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় এবং তাকে তিরস্কার করে স্কুল থেকে বের করে দেয়।

মনিরার মা সুলতানা বেগম সাংবাদিকদের জানান, সামান্য কারণে অন্যায়ভাবে বিদ্যালয় থেকে তার মেয়েকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার মেয়ে লজ্জায় লেখা পড়া বন্ধ হতে পারে বলে এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করেছেন।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ জানান, এ বিষয়ে তার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply