তিন স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে দুই স্কুল ছাত্র গ্রেফতার

|

বরগুনা প্রতিনিধি:

বরগুনার বামনা উপজেলার শের-ই বাংলা সমবায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া তিন স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে দুই স্কুল শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে বামনা থানা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, উত্তর রামনা গ্রামের খলিলুর রহমান খানের ছেলে ও রামনা শের-ই বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র মিলন খান(১৬) এবং একই গ্রামে খালেক হাওলাদারের ছেলে ও হলতা ডৌয়াতলা সমবায় বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম(ভোকেশনাল) শ্রেণির ছাত্র সুজন হাওলাদার(১৬)।

এ ঘটনায় ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে বামনা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। বরগুনার পাথরঘাটা প্রতিনিধি মনোতোষ হাওলাদারের প্রতিবেদন।

আজ শনিবার সকাল নয়টায় উপজেলার রামনা লঞ্চঘাট এলাকার পরিত্যক্ত একটি বাড়ীতে একই বিদ্যালয়ের তিন স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ওই দুই স্কুল ছাত্র ।

নির্যাতিতা স্কুল ছাত্রীরা জানায়, তারা তিনজনে মিলে গোপনে একটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতো। এ ঘটনাটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র মিলন খান জানতে পারে। বিষয়টি মিলন খান তার বন্ধু সুজন হাওলাদারকে জানায়। গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় ছুটির পরে ওই ছাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয় মিলন ও তার সহযোগী সুজন। ওই ফোনটি ফিরে পেতে মিলন ও তার সহযোগী সুজন ছাত্রীদের কাছে এক হাজার টাকা দাবী করে। ছাত্রীরা ওই টাকা দিতে রাজি হলে তাদেরকে টাকা নিয়ে বামনা লঞ্চঘাট এলাকার সিকদার বাড়ীর একটি পরিত্যক্ত টিনের ঘরে আসতে বলে। ছাত্রীরা তাদের মোবাইল ফোন ফেরত নিতে গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে সেখানে যায়। সেখানে ওৎপেতে থাকা মিলন ও সুজন তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদেরকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ছাত্রীরা সংখ্যায় তিনজন হওয়ায় তারা ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।

ছাত্রীরা অভিযোগ আরও জানায়, ওরা ধর্ষণ করতে না পারলেও আমাদের উপর শারীরিক নির্যাতন চালায় ও তাদের ফোন দিয়ে কয়েকটি ছবি তোলে। এই ঘটনাটি কাউকে জানালে ওই ছবি বিকৃত করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা। পরে আমরা সেখান থেকে পালিয়ে বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকদের কাজে বিষয়টি জানাই।

বামনা থানা পুলিশ বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিযুক্ত ওই স্কুল ছাত্র মিলন খানকে বিদ্যালয় থেকে গ্রেফতার করে। অপর অভিযুক্ত সুজন হাওলাদার পালিয়ে যাওয়ার সময় বামনা খেয়াঘাট থেকে স্থানীয় এলাকাবাসীরা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

শের-ই বাংলা সমবায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নির্মল চন্দ্র শীল বলেন, আমি ঘটনাটি শোনার পরপরই বিদ্যালয় সভাপতি, ইউএনও ও ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করি।

বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম বলেন, আমি বিদ্যালয়ে আসলে তিন শিক্ষার্থী এসে আমার পা ধরে কান্নাকাটি করে। পরে তাদের কাছ থেকে বিষয়টি জেনে ঘটনার সাথে জড়িত দশম শ্রেণির ছাত্র মিলন খানকে বিদ্যালয়ের লাইব্রেরী কক্ষে আটক করে বামনা থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করি।

বামনা থানার অফিসার ইন চার্জ এসএম মাসুদুজ্জামান বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত দুইজনকে পুলিশ তাৎক্ষনিক গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় নির্যাতিত ছাত্রীদের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply