মেয়রের চুল কেটে রঙ মাখিয়ে শহরে ঘোরালেন বিক্ষোভকারীরা

|

বলিভিয়ার একটি ছোট্ট শহরের নারী মেয়রকে জোর করে ধরে নিয়ে চুল কেটে লাল রঙে ভিজিয়ে নগ্নপায়ে শহরজুড়ে ঘুরিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

বলিভিয়ায় গেল মাসের বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর সহিংসতায় যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এভাবে লাঞ্ছিত করার পর মেয়রের কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে সই নেয়া হয়েছে।-খবর নিউইয়র্ক টাইমসের।

ভেন্টো শহরের ওই মেয়রের নাম প্যাট্রিশিয়া আরসি। তিনি সরকারবিরোধী অবরোধ ভেঙে দিতে বুধবার লোকজনকে নিয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

কর্মকর্তারা বলেন, এতে এক সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসের নেতৃত্বাধীন দলের একজন সদস্য মেয়র প্যাট্রিশিয়া আরসি। গত ২০ অক্টোবরের নির্বাচনে নিজেকে চতুর্থবারের মতো বিজয়ী ঘোষণা করেন মোরালেস।

এতে জালিয়াতির অভিযোগে তোলেন বিরোধীরা। বিক্ষোভ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সহিংসতায় দেশটিতে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত তিন ব্যক্তির নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী লা পাজেও সহিংস প্রতিবাদ অব্যাহত ছিল। হাত বোমার আঘাতে অন্তত চার জন্য আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন।

মেয়রের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট মোরালেস বলেন, ভেন্টোর মেয়র বোন প্যাট্রিশিয়ার প্রতি আমার সব ধরনের সংহতি রয়েছে। নিজের আদর্শ ও দরিদ্রদের প্রতি নিজের নীতি রক্ষার জন্য তাকে হয়রানি ও অপহরণের শিকার হতে হয়েছে।

দিনের শুরুতেই ভেন্টো শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। শহরের সবেচেয় গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি অবরুদ্ধ করে রাখা বিরোধীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন মোরালেসের সমর্থকরাও।

উপর্যুপরি ঘুষিতে ২০ বছর বয়সী এক কিশোরের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে মেয়রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে সরকারবিরোধীরা শহরের দিকে এগিয়ে যান। অবরোধ ভেঙে দিতে প্যাট্রিশিয়াও বাসযোগে কয়েক হাজার মোরালেস সমর্থককে জড়ো করেছিলেন বলে অভিযোগকারীরা বলছেন।

অফিস থেকে প্যাট্রিশিয়াকে টেনহিঁচড়ে বের করে নিয়ে আসার সময় বিক্ষোভকারীরা মুখোশ পরে ছিলেন, যাতে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব না হয়।

এরপর খালি পায়ে তাকে সেতুর দিকে নিয়ে যান। তাকে হত্যাকারী আখ্যায়িত করে হাঁটু গেড়ে বসিয়ে তার চুল কেটে দেন তারা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, এরপর লাল রঙ তার শরীরে ঢেলে দেন ও পদত্যাগপত্রে সই করতে বাধ্য করেন। তাকে নিয়ে শহরময় পদযাত্রায় বের হন অবরোধকারীরা।

এমন কঠিন সময়েও দমে যাননি মোরালেস সমর্থক ওই নারী মেয়র। হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি থেমে যাব না। তারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছে। পরিবর্তনের এই প্রক্রিয়ার জন্য আমি জীবন দিতেও রাজি আছি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply