আবরারকে মারধর করে ১১ জন, বাকি ১৪ জন ছিল পরিকল্পনা ও সহযোগিতায়

|

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে ১১ জন সরাসরি যুক্ত ছিল। আরও ১৪ জন হত্যা পরিকল্পনাসহ নানাভাবে নৃশংস এই খুনে অংশ নেয়। বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।

মনিরুল ইসলাম বলেন, আবরারকে হত্যায় সরাসরি যুক্ত ছিলেন ১১ জন। এরাই আবরারকে দফায় দফায় মারধর করেন। ঘটনার দিন রাত ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত আবরারকে পেটানো হয়। বাকি ১৪ জন বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্নভাবে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তিনি বলেন, মামলার তদন্তে এখন পর্যন্ত ৩৫ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, অভিযোগপত্রভুক্ত ২৫ আসামির মধ্যে ২১ জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২১ জনের মধ্যে ১৬ জনের নাম আবরারের বাবার করা হত্যা মামলার এজাহারে আছে। তারা হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মেহেদী হাসান রবিন, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মো. মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. মাজেদুল ইসলাম, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা ও এএসএম নাজমুস সাদাত।

বাকি ৫ জনের নাম তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। তারা হলেন- ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এসএম মাহমুদ সেতু।

এ মামলায় এখনও চারজন পলাতক। তারা হলেন- জিসান, তানিন, রাফি ও মোর্শেদ। এদের মধ্যে তিননের নাম মামলার এজাহারে রয়েছে। এজাহারের বাইরে আরেক আসামি রাফি।

আবরার হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত আট আসামি এরই মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন—নাজমুস সাদাত, ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, অনিক সরকার, মুজাহিদুর রহমান, মেহেদি হাসান রবিন, তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর ও মনিরুজ্জামান মনির। বাকিরা পুলিশের কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে বলে জানান মনিরুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় খুন হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে ৫ অক্টোবর বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।

তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply