সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে তুঘলকি কারবার, লোপাট কোটি কোটি টাকা!

|

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসে সরকারের মোটা অংকের টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। অডিট তদন্তে বিষয়টি ধরা পড়ার পর থেকেই এ নেয় তোলপাড় চলছে রেজিস্ট্রার অফিসে, তবে এই নিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে মুখ খুলছেন না কোন কর্মকর্তা।

এদিকে এই ঘটনা ধরা পড়ার পর সাব রেজিস্ট্রার অফিসের ইয়াছিন নামে এক অফিস সহায়কেরও কোনও খোজেঁ পাওয়া যাচ্ছে না।

নিবন্ধন পরিদপ্তরের মহাপরিদর্শক কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা ৩ দিন ধরে এখানে অডিট করার সময় সরকারের মোটা অংকের টাকার গড়মিল দেখতে পান। প্রাথমিক ভাবে সেটি কয়েক কোটি বলে মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা যায় দীর্ঘদিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাব রেজিস্ট্রার অফিসে নানা অনিয়ম দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে। সাধারণ মানুষদেরকে দলিল জমি-জমা রেজিস্ট্রি করে দেয়ার নামে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে গত কয়েক বছর ধরে এখানে কর্মরত সাব রেজিস্ট্রার সরকারি চালান, নকল তল্লাশি, রেজিস্ট্রির ফিসহ নানা খাতের টাকা ব্যাংকে জমা না করে নিজেদের পকেটে রেখে দেন। নিয়মানুযায়ী প্রত্যেক দিনের টাকা ব্যাংক হিসেবে জমা করার কথা ছিল।

বর্তমান সাব রেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমান ছাড়াও এখানে আগে কর্মরত সাব রেজিস্টার মো. শাহ আলম ও মোতাহার হোসেনের সময়ও এই ঘটনা ঘটে। তবে কি পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বর্তমান সাব রেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান টাকা আত্মসাতের তথ্য আমার জানা নেই। এই বিষয়ে এতো কিছু আমি জানি না। টাকা ব্যাংকে জমা করার কথা ছিল কিনা-এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন ব্যাংকে তো জমা করার কথা।

তার সময় টাকা ব্যাংকে জমা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলেন আমি কি পিয়ন, টাকা ব্যাংকে জমা দেবো। এই নিয়ে গত ৩দিন ধরে অডিট চলছে বলেও জানান তিনি। তবে এসব বিষয়ে কথা বলতে তিনি রবিবার তার অফিসে যেতে বলেন।

বর্তমানে অবসরকালীন ছুটিতে থাকা সাবেক সাব রেজিস্ট্রার মোতাহার হোসেন বলেন এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। অডিট শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন কিছু বলতে পারব না। সাবেক সাব রেজিস্ট্রার মো. শাহ আলমের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি অস্ট্রেলিয়া একটি প্রশিক্ষণে যোগ দিতে গেছেন বলে সাব রেজিস্ট্রার অফিসের একটি সূত্র জানায়।

এই ব্যাপারে অডিট কর্মকর্তা মিতেন্দ্র নাথ শিকদার জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না। আমরা তদন্ত করে আইজিআর’র কাছে রিপোর্ট দেবো।

সাব-রেজিস্ট্রার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন বলেও তিনি জানান।

এদিকে অডিট শুরু হওয়ার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিস সহায়ক ইয়াছিনকে বুধবার দুপুরের পর থেকে পাওয়া যাচ্ছে না।

তার কাছে মোটা অংকের টাকা ছিল বলেও জানা গেছে। ইয়াছিনকে না পেয়ে তার পরিবার ও স্বজনদের বৃহস্পতিবার সাব রেজিষ্ট্রার অফিসে ডেকে আনা হয়। সাব রেজিষ্ট্রার তাদের কাছে ইয়াছিনের তথ্য জানতে চান। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply