আবারো কয়লার নামে পানি কিনেছে জ্বালানি বিভাগ, ক্ষতি দেড়শ’ কোটি টাকা!

|

রীতিমত জেনেশুনে আবারো কয়লার নামে পানি কিনেছে জ্বালানি বিভাগ। আর এ কাজে এ দফায় রাষ্ট্রের ক্ষতি প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকা। সবই ঘটছে, খোদ জ্বালানি সচিবের নির্দেশেনায়। এমনকি সরকার গঠিত কমিটির রিপোর্ট উপেক্ষা করে, নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ পানি নিচ্ছে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি। এরকম কর্মকান্ডে বিস্মিত, হতবাক বিশেষজ্ঞরা। আর বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ডক্টর তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।

উৎপাদনে থাকা দেশের একমাত্র কয়লা খনি বড়পুকুরিয়া। যা থেকে কয়লা উত্তোলন করছে চীনা কোম্পানি এক্সএমসসি-সিএমসি কনসোর্টিয়াম। চুক্তি অনুযায়ী কয়লায় পানি বা আদ্রতা ধরা হয় ৫ দশমিক এক শতাংশ।

সম্প্রতি কয়লা লোপাটের ঘটনায় আলোচনায় আসে আদ্রতার পরিমাণ। পেট্রোবাংলা গঠিত কমিটি বুয়েট, জিএসবি ও বিসিএসআইআর এই তিন ল্যাবে পরীক্ষা করে নমুনা। দেখা যায়, এই কয়লায় আদ্রতার পরিমাণ ২ দশমিক ৫৮ ভাগ। তার মানে, কয়লার দামে শতকরা আড়াই ভাগ বাড়তি পানি কিনেই চলেছে বাংলাদেশ।

নতুন চুক্তিতে কয়লা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩২ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন। সেই হিসাবে, বাড়তি পানি আসবে ৮০ হাজার ৭৬৬ টন। প্রতি টন ১৬ হাজার ৯শ টাকা দরে, দাম দাড়ায় ১৩৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। এতকিছুর পরও পেট্রোবাংলাকে চিঠি দিয়ে ৫ দশমিক এক শতাংশ আদ্রতা ধরেই কয়লা নেয়ার কথা বলেছে জ্বালানি বিভাগ।

বিষযটি নিয়ে যমুনা নিউজের সাথে কথা বলতে রাজি হননি জ্বালানি সচিব আবু হেনা মোহাম্মদ রহমাতুল মুনীম। নীতিনির্ধারকরা বলছেন, বর্তমান চুক্তি শেষ হবে ২০২১ সালে। তারপর নতুন আদ্রতা অনুযায়ী কয়লা কিনবে সরকার।

তথ্য প্রমাণ বলছে, চীনা ঠিকাদার কোম্পানিও নতুন আদ্রতা হিসাব করেই কয়লা দিতে রাজি। তারপরও জ্বালানি বিভাগ কেন এই বিশাল টাকা গচ্চা দিচ্ছে, সেই প্রশ্ন উপদেষ্টার কাছে। গেল ১৩ বছরে এই খনি থেকে কোটি টনেরও বেশি কয়লা কিনেছে সরকার। সেগুলোর আদ্রতা মাপতে খনিতে রসায়নবিদ থাকার কথা। রহস্যজনক কারণে সেই পদটি এখনো ফাঁকা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply