ছাত্রলীগ নেত্রীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ ঢাবি অধ্যাপকের

|

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে মারধর ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জোবাইদা নাসরীন। রোববার সন্ধ্যায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মারামারি থামাতে গেলে একপক্ষ তার গায়ে হাত তোলে বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় এরই মধ্যে হল শাখার একজন নেত্রীকে বহিষ্কারও করেছে ছাত্রলীগ। জোবাইদা নাসরীন ওই হলের সহকারী আবাসিক শিক্ষক।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক সমিতি ও হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক।

শিক্ষার্থীদের মাঝে শাড়ি বিতরণকে কেন্দ্র করেই ঘটনার সূত্রপাত। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শাড়ি বিতরণ নিয়ে রোববার সন্ধ্যায় হল শাখায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। মারামারি থামাতে এগিয়ে যান অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন। ওই সময় তাকেও মারধর ও লাঞ্ছিত করেন ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা।

এ বিষয়ে অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীনের বক্তব্য, শাড়ি নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারি অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু হলের হাউজ টিউটর হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো কেউ আক্রান্ত হলে তাকে রক্ষা করা। কে কোন দল করে, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। কিন্তু সেখানে একজন শিক্ষক হিসেবে তাদের থামাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ছাত্রীরা আমার গায়ে হাত তুলেছে।

ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে তিনি বলেন, তাদের মারধরের কারণে আমার ঘাড় ফুলে গেছে এবং আমার পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা। আমি এখন চিকিৎসাধীন। প্রশাসনের কাছে বিচার দিয়েছি। আমি এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার ও নিরাপত্তা চাই।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকিয়া পারভীন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়ে বলেছেন, উপাচার্যকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ঢাবি প্রক্টর গোলাম রব্বানী জানান, অধ্যাপক জোবাইদা নাসরিনকে মারধর ও লাঞ্ছনার ঘটনায় তদন্ত গঠিত হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে রিপোর্ট দেবে তারা।

ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শাড়ি বিতরণ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে রোববার দুই পক্ষের মারামারির ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের হল সংসদের বহির্ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক পাপিয়া আক্তার, হল সংসদের সমাজসেবা সম্পাদক ইসরাত জাহান ইতি ও মিলি রাণী আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রলীগের ৭২-তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মীদের মধ্যে শাড়ি বিতরণ করেন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রওনক জাহান রাইয়ান। ওই সময় ছয়জন শাড়ি না পেয়ে রুমে চলে যান। হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি সালসাবিল রাবেয়া তাদের ডেকে ছয়টি শাড়ি দেন। এতে ক্ষুব্ধ হন রাইয়ান। পরে তাদের দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর প্রায় ঘণ্টাখানেক স্লোগান-পাল্টা স্লোগান ও দফায় দফায় মারধরের ঘটনা চলে।

এ ঘটনায় গত রোববার সালসাবিল রাবেয়াকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই একথা জানানো হয়।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply