‘বরফাবৃত’ এভারেস্টে ঘাস-গুল্ম, দুশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা

|

হিমালয়ের ‘বরফাবৃত’ এভারেস্টে গজাচ্ছে ঘাস-গুল্ম। বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রেক্ষাপটে যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, এই প্রবণতা চলতে থাকলে হিমালয়ের পাদদেশে থাকা বিস্তীর্ণ তল্লাটে বন্যার আশঙ্কা বেড়ে যেতে পারে।

ইংল্যান্ডের কর্নওয়ালের এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সাস্টেনেবল ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক কারেন অ্যান্ডারসনরা নাসার ল্যান্ডসেট উপগ্রহের তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। গ্লোবাল চেঞ্জ বায়োলজি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা।

১৯৯৩ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত আড়াই দশকের তথ্য বিশ্লেষণ করে তারা দেখেন, যে অঞ্চলগুলিতে বছরভর বরফ থাকাই নিয়ম, তেমন এলাকাতেও ঘাস, গুল্মের দেখা মিলেছে। মোটামুটি ১৩ হাজার ৬০০ ফুট থেকে ১৯ হাজার ৭০০ ফুট পর্যন্ত এলাকার মধ্যে এই পরিবর্তন বিজ্ঞানীদের নজরে এসেছে।

এতে উঠে এসেছে দু’টি দিক। এক, উষ্ণায়নের ফলে হিমবাহ গলছে। বরফ কমার সুযোগেই জন্মাতে শুরু করেছে এই ধরনের উদ্ভিদ। দুই, মেরু এলাকায় দেখা গিয়েছে এই ধরনের গুল্ম বা ঘাসের উপস্থিতি উষ্ণায়নকে তরান্বিত করে। কারণ, গাছ বেশি আলো শুষে মাটিকে উষ্ণ করে তোলে।

চলতি শতাব্দীতে হিমবাহ গলার প্রক্রিয়া প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। কারেন বলেন, ‘হিমালয়ে বরফ গলা নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। ২০০০ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে বরফ হারানোর পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে, তাও আমরা জানতে পেরেছি। তাই পানির জোগানের ওপর কতটা প্রভাব পড়বে, তা দেখতেই আমাদের এই গবেষণা। যে অঞ্চলগুলিতে সারা বছর বরফ থাকার কথা, সেখানে এই ধরনের গুল্ম বা ঘাস জন্মানো হিমালয়ের জন্য সত্যিই খারাপ খবর। এর ফলে হিমবাহ আরও বেশি করে গলতে শুরু করলে, বন্যার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যেতে পারে।’

তবে একটিমাত্র গবেষণার ফলাফল দিয়েই আতঙ্ক তৈরি করতে নারাজ কারেন। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান তিনি। হিন্দুকুশ হিমালয় এশিয়ার ১০টি নদী অববাহিকাকে পানির জোগান দেয়। ১৪০ কোটি মানুষ সরাসরি এর মাধ্যমে উপকৃত হয়।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply