বাংলাদেশকে ব্যাটিং ছবক দিয়েই সিরিজ জিতলো পাকিস্তান

|

পরিকল্পনাহীন মন্থর গতির ব্যাটিংয়ে আগেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়েছিল বাংলাদেশ। মাত্র ১৩৭ রানে লক্ষ্য ছুড়ে দিয়ে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জিততে হলো বোলারদের দুর্দান্ত কিছু করে দেখাতে হতো। সেটি তো হলোই না উল্টো হেসেখেলে ৯ উইকেটের বিশাল জয় নিয়ে সিরিজ জিতে নিলো পাকিস্তান।

অথচ দ্বিতীয় ওভারে পাকিস্তানের আহসান আলীকে মাহমুদউল্লাহর তালুবন্দি করে খেলা জমানোর স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন শফিউল। কিন্তু সেটিই শুরু, সেটিই শেষ। এরপর ম্যাচসেরা হওয়া বাবর আজম আর ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে থাকা মোহাম্মদ হাফিজ যেন বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের ছবক দিলেন। বাবর ৪৪ বলে ৬৬ রানে ও হাফিজ ৪৯ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত থেকে ৩ ওভার ২ বল বাকি থাকতেই পাকিস্তানকে জয়ের বন্দরে পৌছে দেন। পাকিস্তানকে ঠেকাতে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ৭ জন বোলার ব্যবহার করেছেন। কিন্তু এক শফিউল ছাড়া কেউই বলার মতো কিছু করতে পারলেন না। ব্যাটসম্যানদের এমন দুর্বল সংগ্রহ ডিফেন্ড করার মতো বোলিং অপশন কি আসলেই আছে বাংলাদেশের?

অথচ কিছুদিন আগেই মাত্র শেষ হয়েছে বিপিএল। ঘরের মাঠে ভালোই রানের বন্যা ছুটিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু বহুল আলোচিত পাকিস্তান সফরে গিয়েই টো-টোয়েন্টি ভুলে গেলো বাংলাদেশ! লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে শুক্রবার প্রথম ম্যাচে ধীর গতির ব্যাটিংয়ই ডুবিয়েছিল টাইগারদের। আজ দ্বিতীয় ম্যাচেও একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করলো তারা। ৪ উইকেট হাতে রেখেও মাত্র ১৩৭ রানে টার্গেট মেনে নেয়া যেকোনো সমর্থকের জন্যই কষ্টকর।

প্রথম ম্যাচে হারের পর ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা বলেছিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। দ্বিতীয় ম্যাচের তার কোনো ছাপ তো দেখাই গেলো না, উল্টো প্রথম ম্যাচে ১০ ওভার শেষে বিনা উইকেটে যেখানে ৬২ রান তুলেছিল বাংলাদেশ আজ সেখানে ৩ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৫৭ রান।

পাকিস্তানি বোলাররা ভালো বলই করেছেন। তাই বলে সেটি আনপ্লেয়েবল কিছু ছিল না। বরং রান রেট বাড়ানোর কোনো ক্ষুধায় দেখা যায়নি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে। যেন ট্রেন চলছে চলুক- স্টেশনে তো পৌঁছাবেই এক সময়!

ম্যাচের দ্বিতীয় বলে শাহীন শাহ আফ্রিদির ভালো একটি ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন নাঈম শেখ। তাতেই গোল্ডেন ডাকের স্বাদ নিয়ে ফিরতে হলো তাকে। বিপিএলে তিনে বেশ ভালো খেলা মেহেদীকে নামিয়ে চমকে দিতে চেয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু ১২ বলে ৯ রান করে খুব বাজেভাবে আউট হয়েছেন মেহেদি। উইকেট থেকে সুইং আদায় করা পাকিস্তানি পেসার হাসনাইনের বাউন্সারকে ঠিক কোথায় পাঠাতে চেয়েছিলেন তা তিনি নিজেও হয়তো জানেন না। হেসে খেলে ক্যাচ ধরলেন পাকিস্তানি কিপার।

তামিম ১৬ রানে একবার বেঁচে যান। পেলেও এখনো এক প্রান্ত ধরে রেখেছেন। ৪০ এর ঘরে একবার এলবিডব্লিউ দেয়া হয় তাকে। কিন্তু রিভিউ নিয়ে আবারও বেঁচে যান। শেষ দিকে হাকিয়ে খেললেও তার ৫৩ বলে ৬৫ রানের ইনিংস কতটা টি-টোয়েন্টি সুলভ সে প্রশ্ন করাই যায়।

চারে নামা লিটন ১৪ বলে ৮ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন, শাদাব খানের এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে। এরপর ২০ বলে ২১ করে আফিফ তামিমের সাথে জুটি এগিয়ে নিয়েছেন বটে কিন্তু ম্যাচের মধ্যভাগেও রান তোলার গতি খুব একটা বাড়াতে পারেনি তারা।

এরপর মাহমুদউল্লাহ, সৌম্য কিংবা বিপ্লবও খেলার গতিপথ ঘুরানোর মতো কিছু করতে পারেনি। ফলে ১৩৬ রানের সাদামাটা সংগ্রহ নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে।

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৬/৬ (তামিম ৬৫, নাঈম ০, মেহেদি ৯, লিটন ৮, আফিফ ২১, মাহমুদউল্লাহ ১২, সৌম্য ৫*, আমিনুল ৮*; হাসনাইন ২/২০)।
পাকিস্তান: ১৬.৪ ওভারে ১৩৭/১ (হাফিজ ৬৭*, বাবর ৬৬*)।
ফল: পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply