প্রেমিকের সাথে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় মাকে হত্যা

|

স্টাফ রিপোর্টার,মানিকগঞ্জ

মানিকগঞ্জে দিনে দুপুরে গৃহবধু মাহমুদা বেগম (৪৫) কে হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ।
প্রেমিকের সাথে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় মা মাহমুদা বেগমকে পরিকল্পিত ভাবে প্রেমিক ও তার সহযোগীদের দিয়ে হত্যা করান মেয়ে জুলেখা আক্তার জ্যোতি। হত্যাকাণ্ডে সহযোগী ছিলো প্রেমিক ও তার তিন বন্ধু।

সোমবার রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়।

নিহতের মেয়ে জুলেখা আক্তার জ্যোতি, প্রেমিক নাঈম ও তার বন্ধু রাকিবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার দুপুরে আসামিরা মানিকগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র বিচারক শাকিল আহম্মেদের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার উপ-পুলিশ পরির্দশক (এস,আই ) শামিম আল মামুন জানান, গত নভেম্বরে জ্যোতির স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এর মধ্যে ফেসবুকের মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে উঠে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জের আরাকুল গ্রামের নাঈমের সাথে। নিজেরা বিয়ের জন্য প্রস্তুতিও নেয়। কিন্তু জ্যোতির মা মাহমুদা বেগম এতে রাজি ছিলেন না। তিনি মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার জন্য চেস্টা চালাচ্ছিলেন। পাশাপাশি মেয়েকে শাসনও করতেন।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রেমিকের নাঈমকে সাথে নিয়ে জ্যোতি নিজের মাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
ঘটনার আগের দিন ২১ জানুয়ারি রাতেই প্রেমিক নাঈম, রাকিবসহ আরও দুই বন্ধু অবস্থান নেয় জ্যোতির শোবার ঘরে। বন্ধুদের ভাড়া করা হয় দেড় লাখ টাকায়। এর মধ্যে জ্যোতি তার স্বর্ণালংকার এবং নগদ ১৬ হাজার টাকা দিয়ে প্রাথমিক ভাবে কিছু শোধ করে হত্যাকারীদের। রাতেই হত্যাকাণ্ড ঘটনার পরিকল্পনা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি।

২২ জানুয়ারি বুধবার সকালে জ্যোতির বাবা জহিরুল ইসলাম আলিয়ার প্রাতঃভ্রমনে বাড়ির বাইরে যান। আর মা মাহমুদা বেগম সেলাই মেশিনে কাজ করার জন্য বসেন। এই সুযোগে মাহমুদা বেগমের রুমে ঢুকে নাঈমসহ আরো দুইজন। এরা রুমে ঢুকেই মাহমুদা বেগমকে গলা টিপে হত্যা করে।

হত্যাকাণ্ডকে ডাকাতির সাজিয়ে ওই সময় বক্তব্য দেন জ্যোতি আক্তার। পুলিশ ও সংবাদকর্মীদের জানান,পাশের রুমে তার হাত-পা বেঁধে ৪/৫ জন দুর্বৃত্ত ঘরে ঢুকে তার মাকে হত্যা করে।

কিন্ত তার কথাবার্তায় সন্দেহ হওয়ায় ঘটনার দিনই জ্যোতিকে আটক করে পুলিশ। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আটক করা হয় প্রেমিক নাঈম ও রাকিবকে। কোর্টে হাজির করার পর জ্যোতিকে চারদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। আদালতে জ্যোতি আক্তার রোববার দিন ও অপর দুই আসামি রাকিব ও নাঈম সোমবার আদালতে ১৬৪ ধারা দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত ২২ জানুয়ারি সকাল ১০ টায় মানিকগঞ্জ শহরের দক্ষিণ সেওতা গ্রামে ব্যবসায়ী আলিয়ার রহমানের স্ত্রী মাহমুদা বেগমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply