শামিকেই বিশ্বের সেরা পেসার মনে করেন শোয়েব

|

বর্তমান বিশ্বের সেরা পেসার কে? এমন প্রশ্নের উত্তরে একেকজন একেক কথা বলবেন। তবে, সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত নামের মধ্যে ভারতের মোহাম্মদ শামির নাম আসবে না, এটাই বলাই যায়। কিন্তু, সাবেক পাকিস্তানি পেসার শোয়েব আখতারের মতে, বর্তমান বিশ্বের সেরা পেসার ভারতের শামীই।

নিউজিল্যান্ড সিরিজেই আরেকবার নিজেকে প্রমাণ করেছেন শামি। জয়ের জন্য শেষ ওভারে নিউজিল্যান্ডের দরকার ছিল মাত্র ৯ রান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটি তোলা মামুলি ব্যাপার। অধিকন্তু ক্রিজে ছিলেন দুই সেট ব্যাটসম্যান কেন উইলিয়ামসন ও রস টেইলর। সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানও তারা। অথচ দুজনকেই ফিরিয়ে ম্যাচ সুপারে ওভারে নিয়ে যান ভারতের পেসার মোহাম্মদ শামি। যেখানে নাটকীয় জয় তুলে নেয় কোহলি বাহিনী।

প্রচণ্ড স্নায়ুচাপের মধ্যে ২০-তম ওভার করতে আসেন শামি। প্রথম বলেই ছক্কা খেয়ে বসেন তিনি। কিন্তু শামি মাথা ঠাণ্ডা রাখেন। দ্বিতীয় বল করলেন একেবারে সঠিক লেংথে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে। ওই বলে এক রান হয়। নিউজিল্যান্ডের চার বলে প্রয়োজন দুই রান। এই পরিস্থিতিতে শামির ওভারের তৃতীয় বলের মুখোমুখি হন উইলিয়ামসন। শামির শর্ট বল গালি অঞ্চল দিয়ে খেলার চেষ্টা করেন কিউই অধিনায়ক। কিন্তু বল কিছুটা বেশি ফাইন খেলেন তিনি। উইকেটরক্ষক কেএল রাহুল তার ডান দিকে লাফিয়ে ক্যাচ ধরেন।

ফলে নিউজিল্যান্ডের শেষ তিন বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল দুই রানের। তখনও মনে হচ্ছিল না ম্যাচ নিউজিল্যান্ড হারবে। টিম সেইফার্ট ব্যাট করতে নামেন। বড় শট খেলার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু বল মিস করেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের দুই বলে দুই রান দরকার। এই পরিস্থিতিতে ওভারের পঞ্চম বল করেন শামি। সেই বলও খেলতে গিয়ে মিস করেন সেইফার্ট। নন স্ট্রাইকার টেলর রান নিতে দৌড় শুরু করেন। কেএল রাহুলের থ্রো উইকেটে লাগেনি। একটি বাই রান পায় নিউজিল্যান্ড। ম্যাচে উভয় দলের স্কোর তখন সমান।
শেষ বলে জয়ের জন্য ১ রানের প্রয়োজন ছিল নিউজিল্যান্ডের। কিন্তু শামির দুরন্ত ইয়র্কার দেন। অফ স্টাম্পের বাইরে এই ফুলার লেংথ বলে টেলর অন সাইডে স্লগ করার চেষ্টা করেন টেলর। কিন্তু বল তার ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্পে আছড়ে পড়ে। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।

এই নাটকীয় ওভারটির পর সামিকে নিয়ে আরও একদফা আলোচনা চলছে ক্রিকেট বিশ্বে। শামির উচ্চতা গড়পড়তা। ঝুলিতে প্রকৃতি প্রদত্ত কোনো অস্ত্র নেই। শুধু পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের ফলে বলে গতিময় ইয়র্কার, সুইং, বাউন্সার আদায় করে নিচ্ছেন। দলকে একের পর এক ঐতিহাসিক ক্ষণের উপলক্ষ এনে দিচ্ছেন। আর এ কারণেই শামিতে মজেছেন পাকিস্তানের সাবেক স্পিডস্টার শোয়েব আখতার।

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে তিনি বলেন, যখন টেইলর শামিকে প্রথম বলেই ছক্কা মারল, তখন আমি ধরেই নিয়েছিলাম ম্যাচ শেষ। কিন্তু না! অভিজ্ঞ বোলার পরে স্বরূপে ফিরে আসে। অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে সব নিংড়ে দেয়। সে বুঝে ফেলেছিল, উইকেটে শিশির আছে। সেটি কাজে লাগিয়ে বাড়তি গতি আদায় করে নেয় ও। সঙ্গে বলকে স্কিড করায়। ফলে তার বল কিউই বোলারদের পক্ষে খেলা সম্ভব হয়নি।

সব কৃতিত্ব শামিকে দিচ্ছেন শোয়েব। বিশেষত তার বোলিং বৈচিত্র্য এবং ব্যাটসম্যানদের পড়ে ফেলার দক্ষতার জন্য। তাই তাকে ভারতের তথা বিশ্বের সেরা বোলার বলে আখ্যায়িত করেছেন তিনি।

রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস বলেন, শামি খুব চালাক বোলার। সে ভারতের তথা বিশ্বেরই সেরা বোলার। যে পরিস্থিতিতেই তার হাতে বল তুলে দেয়া হোক না কেন, চমৎকার করে ও। সেটি বিশ্বকাপের মতো বিশ্বমঞ্চ হোক কিংবা নিউজিল্যান্ডে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। শামি খুবই স্মার্ট বোলার। খেয়াল করলে দেখা যায়, ইয়র্কার কাজ না করলে দ্রুত বোলিংয়ে পরিবর্তন আনে সে। সুইং, বাউন্সার দেয়া শুরু করে নতুবা লাইন-লেন্থ বজায় রাখে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply