করোনাভাইরাস: সাগরে ভাসমান মৃত্যুকূপ

|

পরিবেশ বলছে সাগরে ভাসমান কারাগার, তবে বাহির থেকে দেখলে তা বিলাসবহুল ক্রুজ শিট ‘ডায়মন্ড প্রিন্সেস’।

জাহাজের অভ্যন্তরে কয়েকজন যাত্রী করোনাভাইরাস আক্রান্ত বিধায় ভিড়তে পারছেন না কোন ভূখণ্ডে। এক-দু’জন থেকে সপ্তাহের ব্যবধানে জাহাজটিতে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৪-তে।

২০ জানুয়ারি হংকংয়ের এক বাসিন্দা জাপানের ইয়োকোহামা থেকে ওঠেন এ প্রমোদতরীতে। ২৫ জানুয়ারি জাহাজ থেকে নেমে গেলেও, ৩১ জানুয়ারি তার দেহে ধরা পড়ে ছোঁয়াচে 2019-nCoV ভাইরাস। এরপরই সংক্রমণের শঙ্কায় জাপান সরকারের সিদ্ধান্তে, কোয়ারেন্টিনে হাজারের বেশি ক্রু-সহ ৩৭শ’আরোহী।

ডায়মন্ড প্রিন্সেস’র যাত্রী গে কোর্টার বলেন, “এখান থেকে বের হতে চাই আমরা। চীনের উহান থেকে সব দেশ নিজেদের নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে। তাহলে আমরা কেন এখানে আটকে আছি।?”

বর্তমানে ইয়োকোহোমা বন্দরে রয়েছে প্রমোদতরীটি। অতিথিদের স্বাভাবিক জীবনযাপন নিশ্চিতে স্যাটেলাইট টিভি, ফিল্ম, সংবাদপত্র, রুম সার্ভিস, ইন্টারনেট, ফ্রি ফোন কলসহ আছে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা। কিন্তু অবরুদ্ধ জাহাজে আক্রান্তের সংখ্যা হু-হু করে বেড়ে চলায়, ভাইরাস-আতঙ্ক তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে আরোহীদের। মৃত্যুকূপে পরিণত হওয়ার আগেই জাহাজ ছাড়তে চান সবাই।

জাহাজের আরেক যাত্রী ফিলিপ কোর্টার বলেন, “জাহাজের বাতাসে ভাইরাসটি মিশে গেছে বলে চিকিৎসকদের আশঙ্কার কথা জানতে পেরেছি। তাই শুরুতে তেমন কিছু মনে না হলেও এখন ভয় পাচ্ছি।”

অবরুদ্ধদের বেশিরভাগই জাপানের নাগরিক। আছেন যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়াসহ ৫৬ দেশের নাগরিকও। জাপান সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অন্তত ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জাহাজটিতেই থাকতে হবে তাদের।

এদিকে, হংকংয়ে দ্য ওয়ার্ল্ড ড্রিম আর তাইওয়ানে সুপারস্টার অ্যাকুয়ারিয়াসে সাড়ে পাঁচ হাজার আরোহী আছেন কোয়ারেন্টিনে। কমপক্ষে দু’সপ্তাহ জাহাজেই থাকবেন পর্যবেক্ষণে। তবে বিপদে রয়েছে পূর্ব চীন সাগরের আরও দুটি জাহাজ। ব্রিটিশ-মার্কিন মালিকানাধীন দ্য ওয়েস্টারডামকে নোঙর করতে দিচ্ছে না কোনো দেশ।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply