করোনাভাইরাস নিয়ে পরামর্শ দিচ্ছে রোবট

|

নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সম্পর্কে পরামর্শ ও নির্দেশনা দিতে দেখা গেছে একটি রোবটকে। ভাইরাসটি নিয়ে বিশ্বজুড়ে আতঙ্কের মধ্যেই পাঁচ ফুট উচ্চতার রোবটি বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, বন্ধুত্বপূর্ণ চেহারার রোবটটি সোমবার টাইম স্কয়ারে নতুন এ ভাইরাস সম্পর্কে তথ্য দিয়ে অসংখ্য লোকের কৌতূহল ও উদ্বেগ মিটিয়েছে।

রোবটটির বুকে স্থাপন করে দেয়া আইপ্যাডের মতো একটি টাচ স্ক্রিনের প্রশ্নাবলীতে ক্লিক করলেই সেটি তার জবাব দিয়ে দিচ্ছে। এভাবেই যন্ত্রটির সঙ্গে আলাপ জমাতে দেখা গেছে উৎসুক পথচারীদের।

ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বানানো স্বয়ংক্রিয় রোবটকে প্রমোবট নামে ডাকা হয়। স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেবা দিতে সক্ষম এ রোবটটি বানিয়েছে রুশ পরিচালিত ফিলাডেলফিয়াভিত্তিক একটি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান।

নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ওলেগ কিভোরকুৎসেভ বলেন, আমরা একটি বিশেষ সফটওয়ার বানিয়েছি, যা করোনাভাইরাসের লক্ষণ শনাক্ত করতে পারে।

তিনি জানান, আমরা বুঝতে পারছি, এই করোনাভাইরাস সমস্যা কতখানি গুরুতর; মানুষ দিশেহারা, আতঙ্কিত এটি নিয়ে। কিন্তু তারা যদি সামান্য কিছু জানে, যেমন- করোনাভাইরাসের লক্ষণ কী, কীভাবে সুরক্ষিত থাকা যাবে, তাহলে সবাই ভালো থাকবে, সবাই খুশি হবে।

লক্ষণ বলতে পারলেও টাইমস স্কয়ারে তথ্য ও পরামর্শ দেয়া রোবটটি করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে পারে না। তবে জ্বরের মতো লক্ষণ আছে কিনা; তা নিয়ে প্রশ্ন করতে পারে এই রোবট।

লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক ভ্রমণে যাওয়া তারা হিলি বলেন, এটা খুবই বুদ্ধিমানের কাজ। সত্যিকার অর্থে বুদ্ধিমানের কাজ।

এদিকে চীনে দেখা গেছে, রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলা এক বৃদ্ধ নারীর মাথার ওপর একটি ক্যামেরা ভেসে আছে। তিনি ওপরে তাকাতেই তার মুখে হতাশা ও বিভ্রান্তির ছায়া পড়েছে।

একটা কণ্ঠ ভেসে এসে তাকে বলছে– হ্যাঁ চাচি, আপনার সঙ্গে ড্রোন কথা বলছে। মাস্ক না পরে আপনারা রাস্তায় হাঁটা কিংবা বের হওয়া উচিত নয়।

চোখেমুখে বিভ্রান্তি নিয়ে ওই নারী জোরসে হাঁটা দেন। আর মাঝে মাঝে মাথার ওপরের ড্রোনের দিকে তাকাচ্ছেন, যে তাকে অব্যাহত নির্দেশনা দিয়েই যাচ্ছে; আপনার এখন বাড়ি ফিরে যাওয়া উচিত এবং হাত ধুয়ে ফেলতে ভুল করবেন না।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার চীনের কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থার অধীনে এভাবেই চলছে সব কার্যক্রম।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ করা আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মাহজোং টেবিলে বসা কয়েকজনকে পুলিশের একটি ড্রোন বলছে, খেলা বন্ধ করে যথাসম্ভব এখনই জায়গাটি ত্যাগ করুন।

একটি ছোট্ট শিশু ঔৎসুক্য নিয়ে ড্রোন দিকে তাকালে, সেটি তাকে জানায়, আমার দিকে তাকিও না। তোমার বাবাকে এখনই বাড়িতে ফিরে যেতে বলো।

কয়েক দশক ধরে ভিন্নমতাবলম্বী ও অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিদের ধরপাকড়ে যেসব অত্যাধুনিক কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থা প্রয়োগ করে আসছে চীন, এবার করোনাভাইরাস উপদ্রুত উহানে সেগুলোই কাজে লাগাচ্ছে।

দ্রুত বিস্তার ঘটা এই ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে দেশটিকে তার অত্যাধুনিক প্রযুক্তিও কাজে লাগাতে দেখা গেছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply