করোনাভাইরাস থেকে সন্তানদের রক্ষায় বাবার আত্মহত্যা

|

ভুলবশত তার মনে হয়েছিল, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এ ধারণা থেকে তিনি পরিবারকে দূরে রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। তারা যাতে কাছে ঘেঁষতে না পারেন, সে জন্য পরিবারের সদস্যদের দেখলেই পাথর ছু@ড়তে থাকেন। পরে নিজেই ফাঁসিতে ঝুলে পড়েন।

বালা কৃষ্ণা নামের এই ভারতীয়র স্বজনরা বলছেন, করোনাভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন ঘটনাবলির ভিডিও তিনি নিজের স্মার্টফোনে পাগলের মতো দেখেছেন। এরপর তার কাছে মনে হয়েছে, তিনি নিজেই এতে আক্রান্ত হয়েছেন।

ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তর জেলায় মঙ্গলবার এমন ঘটনাটি ঘটেছে। ডেইলি মেইলের খবরে দাবি করা হয়, ৫০ বছর বয়সী এই কৃষক তার স্ত্রী ও সন্তানদের ঘরের ভেতরে আটকে রাখেন। এরপর মায়ের কবরের কাছেই একটি গাছে ফাঁস লাগিয়ে তিনি ঝুলে পড়েন।

তার ছেলে বালা মুরালি বলেন, গত সপ্তাহে বুধবার বাবা নিজেই তিরুমালা হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হন। এর আগে তিনি কয়েক দিন অসুস্থ ছিলেন। তখন তার ভাইরাসজনিত রোগ শনাক্ত হয়েছিল।

কিন্তু চিকিৎসক তাকে নিশ্চিত করেন যে, তার করোনাভাইরাস হয়নি। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ১৩৫০ জন মারা গেছেন।

ভারতে মাত্র তিন ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও অন্ধ্রপ্রদেশে কোনো প্রাদুর্ভাব ছড়ায়নি। কিন্তু বালা কৃষ্ণার মনে হয়েছিল– তিনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। পরে রোববার তিনি শিসামনাইডুতে ক্যান্দ্রিগা গ্রামে যান এবং পরিবারকে তার থেকে দূরে থাকতে বলেন।

যখন পরিবারের সদস্যরা তার কাছে আসতে চেষ্টা করেন, তখন তিনি তাদের প্রতি পাথর ছুঁড়ে মারেন। তার ছেলে বলেন, তিনি কাছে আসতে চেষ্টা করলেই আমাদের ওপর পাথর ছুঁড়ে মারতেন। সোমবার সারাদিন তিনি করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ভিডিও দেখে কাটান। এতে তাকেও এই ভাইরাস আক্রান্ত করেছে বলে তার মনে হয়েছে।

তার এই প্রাণঘাতী ভাইরাস হয়নি এমন বোঝাতে চেষ্টা করলেও তিনি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। মঙ্গলবার তিনি পরিবারের সবাইকে তালাবদ্ধ রেখে নিজেই গাছের সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েন।

তার স্ত্রী লক্ষ্ম দেবী বলেন, তাকে মুক্ত করতে প্রতিবেশীদের ডাকলেও ততক্ষণে সব কিছু শেষ হয়ে গেছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply