প্রথা ভেঙে দৌলতদিয়ায় যৌনকর্মীর জানাজা, দাফন

|

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
দেশের বৃহত্তর যৌনপল্লী অবস্থিত রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায়। এই যৌনপল্লীতে কয়েক হাজার যৌনকর্মী রয়েছে। দৌলতদিয়ার এই যৌনপল্লীতে এতো দিন কোন যৌনকর্মীর মৃত্যু হলে পদ্মা নদীতে লাশ ডুবিয়ে দেওয়া হতো বলে। পরে পল্লীর পাশে একটি গোরস্থান হলেও সেখানে জানাযার নামাজ ও কাফনের কাপড় ছাড়াই যৌনকর্মীর মৃতদেহ মাটি চাপা দেওয়া হতো।

গত ২ ফেব্রুয়ারি রোববার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর একজন ৬৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা প্রাক্তন যৌনকর্মী হামিদা বেগমের মৃত্যু হয়। প্রথা ভেঙে গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আশিকুর রহমান, পিপিএম (সেবা) মৃতের জানাজার নামাজ ও দাফন কাফনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ঐ দিন রাত ৯টায় জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজার নামাজে ওসি ছাড়াও দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল,ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল সহ স্থানীয়রা অংশ নেন।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার সদ্য যোগদানকৃত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আশিকুর রহমান,পিপিএম (সেবা) বলেন, যৌনকর্মীরাও মানুষ। তাদেরও অধিকার রয়েছে স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকার। আর এতোদিন তাদের কেউ মারা গেলে ধর্মীয়ভাবে দাফন কাফনের ব্যবস্থা ছিলো না। এখন থেকে তাদের ধর্মীয় ভাবেই জানাজার নামাজ ও দাফন কাফনের ব্যবস্থা হবে।

দৌলতদিয়া পূবপাড়া যৌনপল্লীর ‘অসহায় নারী ঐক্য সংগঠন এর সভানেত্রী ঝুমুর বেগম বলেন, আগে এখানে কেও মারা গেলে তাকে নদীতে ভাসানো বা মাটি চাপা দেওয়া হতো। আমরা প্রশাসনের অফিসারদের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম যে আমাদের এই পল্লীর বেশির ভাগ নারীই মুসলিম। আমরা মারা গেলে যেন আমাদের জানাজা আর দাফন হয়। সেই দাবির প্রেক্ষিতে আমাদের জানাজা হচ্ছে এটি ভাগ্যের ব্যাপার।

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল বলেন,দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে যারা রয়েছে তারা তো আমাদের দেশেরই মানুষ। তারা যে কাজটা করছে সেটা তাদের পেশা। তারাও আমাদের মত অধিকার রাখে বেঁচে থাকার। মারা গেলে এখন ধর্মীয়ভাবে জানাজার নামাজ ও দাফন হচ্ছে এটা অনেক ভালো উদ্যোগ।

রাজবাড়ী জেলা ইমাম কমিটির সভাপতি আবুল এরশাদ মোঃ সিরাজুম্মুনির জানান,এই বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। বিষয়টি নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বা কোন মুফতির কাছ থেকে ফতোয়া জানতে হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply