করোনাভাইরাস রুখতে ডাক্তার-নার্সদের মাথা ন্যাড়া করছে চীন

|

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত নারী ডাক্তার ও নার্সদের টাক করছে চীন। ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আত্মবিশ্বাস প্রদর্শনের অংশ হিসেবেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে বেইজিং। প্রথম প্রথম রাজি না হলেও পরে চাপে পড়ে, চাকরি বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত চুলের মায়া ত্যাগ করেছেন দেশটির অসংখ্য ডাক্তার-নার্সরা। সরকার বলছে, রোগীদের আরও দ্রুত সেবা দেয়ার জন্য ও রোগের ঝুঁকি কমাতে স্বেচ্ছায় নিজেদের মাথা ন্যাড়া করছেন নার্সরা। খবর দ্য সান, ডেইলি মেইলের।

কিন্তু গানসুর প্রদেশের উইমেন্স অ্যান্ড চিলড্রেন হসপিটাল নামে সরকারি একটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, নারী ডাক্তার ও নার্সদের ন্যাড়া হতে বাধ্য করছে তারা। স্থানীয় দৈনিক গানসু ডেইলির টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা একটি ভিডিও ভাইরাল হতেই এ দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা গেছে, গানসু প্রদেশের ওই নার্সরা উহানে যাওয়ার আগে মাথা ন্যাড়া করছেন। এ সময় তাদের কাঁদতেও দেখা যায়। জবরদস্তির বিষয়টি আগাগোড়া অস্বীকার করেছে হাসপতাল কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির বক্তব্য, সেবা দেয়ার সুবিধার্তে তারা সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় ন্যাড়া হয়েছেন। ওই ১৫ নারী নার্স সদস্যের দলকে শনিবার গানসু থেকে উহানে পাঠানো হয়।

চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার টুইটারে পোস্ট করা একটি ভিডিওর তথ্যানুসারে, মাথা ন্যাড়া করাটা নার্সদের সুরক্ষামূলক পোশাক পরা সহজ করে তুলবে, পাশাপাশি রোগজীবাণুর সম্ভাব্য বিস্তার হ্রাস করবে।

উহানের হাসপাতালের ডাক্তাররা বাথরুমে যাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। ডাক্তাররা হাসপাতালে বড়দের ডায়াপার পরছেন। যেন বাথরুমে যাওয়ার সময়টা বাঁচিয়ে তা রোগীদের জন্য ব্যয় করা যায়। কিছুদিন আগে পিপলস ডেইলি চায়নার টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, দীর্ঘ সময় মাস্ক পরে থাকার কারণে নার্সদের মুখের ওপর রক্ত জমে গেছে, ক্ষত তৈরি হয়েছে। বিদঘুটে হয়ে গেছে তাদের সুন্দর মুখ। চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এবং মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ডাক্তার-নার্সদের।

মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০১০ জনে। এছাড়া আরও ৭৫ হাজার ২৮৫ জন কোভিড-১৯ নামের এ রোগে এখন আক্রান্ত। মঙ্গলবার চীনে আরও ১৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭৪৯ জন। দুই মাস ধরে চীনের উহানের হাসপাতালগুলোয় জরুরি সেবা দিয়ে চলেছেন দেশটির চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভাইরাসটির কবল থেকে মুক্ত হওয়া যাচ্ছে না। গত পরশু হাসপাতালের এক পরিচালকেরও মৃত্যু হয়েছে। এমন অবস্থায় উহানে বহু ডাক্তার ও নার্স পাঠানোর দরকার পড়ে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply