করোনা শনাক্তে যেসব পরীক্ষা করতে পারেন!

বিশ্বজুড়ে মহামারী আকার ধারন করেছে করোনাভাইরাস। মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলছে দিনে দিনে। সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ২৮৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, করোনার প্রাথমিক লক্ষণগুলো ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো। হালকা জ্বর তারপর সর্দি, কাশি, একটু শ্বাসকষ্ট বা বুকে চাপ লাগা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে প্রথমদিকে। তবে আতঙ্কের কিছু নেই বলেও আশ্বস্ত করেছে সংস্থাটি। হালকা জ্বর, সর্দি, কাশি, একটু শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিলে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।

জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসক ড. কাজী সাইফুদ্দিন বেননুর কিছু পরীক্ষার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, করোনার উপসর্গ বোঝার জন্য গলার ভেতরে, নাকের গোড়ার কাছ থেকে তুলা দিয়ে লালা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে হবে। এটির নাম হলো রিয়াল টাইম পিসিআর’ বা রিয়াল টাইম পলিমারেস চেইন রিঅ্যাকশন।

এই পরীক্ষাটি করার সক্ষমতা এবং এর জন্য দরকারি সরঞ্জাম এখনও পর্যন্ত রয়েছে শুধু ঢাকায় অবস্থিত সরকারি সংস্থা রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বা আইইডিসিআরের ল্যাবেই।

বেননুর আরও বলেন, লালা ছাড়া শরীর থেকে আর কোনো নমুনায় এই ভাইরাস ধরা পড়ে না। এক্ষেত্রে জ্বর বা কাশির জন্য সেসব চিকিৎসা দেয়া হয় সেটিই দেয়া হয়। তবে এই রোগের অ্যান্টিবায়োটিক এখনও তৈরি হয়নি বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।

করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে সাধারণ ল্যাবের চেয়ে অধিক সক্ষমতাসংবলিত ল্যাব দরকার বলে জানান সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রমণ রোগ ও রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের পরিচালক শাহনীলা ফেরদৌস। তিনি বলেন, এই পরীক্ষার জন্য ‘বায়োসেফটি টু প্লাস’ বা ‘বিএসএলটু প্লাস’ মানের ল্যাব প্রয়োজন।

এ বিষয়ে শাহনীলা ফেরদৌস আরও জানিয়েছেন, দেশের কয়েকটি হাসপাতালে এমন গবেষণাগার কিছুটা রয়েছে, যেমন– ঢাকায় জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটি ও চট্টগ্রামে ইনফেকশাস ডিজিজ হাসপাতালের ল্যাবগুলোর সক্ষমতা বাড়িয়ে ‘বায়োসেফটি টু প্লাস’ করা সম্ভব।

তবে শরীর থেকে এই ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা খুব ঝুঁকিপূর্ণ একটি কাজ বলেও জানান শাহনীলা ফেরদৌস। যেহেতু আইইডিসিআর এই কাজটি ইতোমধ্যে করছে, তাদের সক্ষমতা রয়েছে; তাই এ কাজটি আপাতত তারাই করছে।

এদিকে পাশের দেশ ভারতেও বিভিন্ন রাজ্যে করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ সরকার বলছে, এখনও পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি আমাদের দেশে।