সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ, যুবকের আত্মহত্যা!

|

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে অপমানে কীটনাশক পানে মনমোতন হাওলাদার(৩৫) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছে ব‌লে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার রা‌তে উপজেলার উত্তর আমড়াগাছিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মনমোহন উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের উত্তর আমড়াগাছিয়া গীলাতলী গ্রামের মৃত মনোরঞ্জন হাওলাদারের একমাত্র ছেলে।

সুদি মহাজনদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গত ১২ মার্চ মনমোহন মির্জাগঞ্জ থানায় রফিক, শহিদ বিশ্বাসসহ ৭/৮ জ‌নের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে মির্জাগঞ্জ থানার এসআই ঘটনাটি তদন্ত করে সত্যতা পান।

মন‌মোত‌নের পারিবারিক সূত্রে প্রকাশ, উপজেলার উত্তর আমড়াগাছিয়া এলাকার রফিক দোকানদার, শহিদ বিশ্বাস, করিম ও রহিম সরদারসহ প্রায় ২৮ জনের কাজ থেকে চওড়া সুদে টাকা নিয়ে মুরগির খামার ও চায়ের দোকান দিত মনমতোন। সুদের টাকা ঠিক মতো পরিশোধ না করলে সুদি মহাজনরা তাকে নানাভাবে গালাগালিসহ মারধর করতো বলে আত্মীয় স্বজন ও পরিবারের অভিযোগ। এমনকি সুদের বিনিময়ে তার জমি লিখে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

মনমোতনের মেয়ে মিতু জানান, টাকার জন্য প্রায়ই ওই সব লোকেরা বাড়িতে এসে গালিগালাজ করতো। ‌ঘটনার দিন বিকালে খামারের কর্মচারী গোপাল সরকার বাড়িতে এসে বলে যে তার বাবা মন‌ম‌তোন মির্জাগঞ্জ সদ‌রে গেছে তার মা‌কেও যেতে বলেছে। এরপর সুদ‌খোর গোপাল ও রফিক বাড়িতে এসে তার বাবাকে খুঁজতে থা‌কে। বাবা‌কে না পে‌য়ে গোপাল তা‌দের ঘরের চাবি চায়। পরে আমি ভয়ে দ্রুত মির্জাগঞ্জ চলে যাই। সেখানে মা-বাবাকে না পেয়ে দ্রুত বাড়িতে ফিরে এসে আমাদের মুরগির খামারের কাছে গ্যারেজের ভিতর থেকে বাবার ডাক-চিৎকার শুনতে পেয়ে গ্যারেজের ভিতরে ঢুকে দেখি বিষের বোতল এবং জানালা ভাঙ্গা বাবা প্রায় অজ্ঞান অবস্থায় পরে আছে। ওই অবস্থায় বাবাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাবার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে বরিশাল শেবাচিমে প্রেরণ করে। বরিশাল যাওয়ার পরে বাবা (মনমোতন) মারা যায়।

অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা মির্জাগঞ্জ থানার এসআই মোঃ সাইদুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করে চওড়া সুদের সত্যতা পাওয়া যায়। কিছুদিন আগে রফিকসহ কয়েকজন সুদ ব্যবসায়ীরা মতমোতনের সাথে খারাপ আচরণও করে বলে জানা যায়। হয়তো এসব ঘৃণার কারণে এহেন ঘটনা ঘটাতে পারে।

মির্জাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এমআর শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত পরিবারের কাছ থেকে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply