মহানায়কের জন্মশতবার্ষিকী, বাঙালির অনন্য অনুভবের দিন

|

বাঙালি জাতির জন্য অনন্য অনুভবের দিন আজ। একশো বছর আগে, এই দিনে সৃষ্টি হয়েছিল ইতিহাসের। জন্ম হয়েছিল এক স্ফূলিঙ্গের, যা ক্রমশ বিকাশিত হয়ে রূপ নিয়েছে অগ্নিপুরুষে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রামের মহানায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী আজ। ঠিক একশো বছর আগে, এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ এই বাঙালি।

বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত এই নেতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সরকার ১৭ মার্চ থেকে পরবর্তী এক বছরকে ‘মুজিব বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। বছরব্যাপী জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী সাড়ম্বরে পালনের সব আয়োজন চূড়ান্ত হলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় বঙ্গবন্ধুকন্য ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বড় সব আয়োজন স্থগিত করা হয়। তবে ঘরোয়াভাবে কম জনসমাগমে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজারে শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া, ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরেও সম্মাননা জানাবেন তারা। পাশাপাশি মসজিদ, মন্দির’সহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে থাকছে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ৫৫ বছর বয়সে কিছু বিপথগামী সেনার হাতে নিহত হন বঙ্গবন্ধু। তাকে স্তব্দ করে দেয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে কারণ বিশ্বজুড়ে আজও পরম শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম।  বঙ্গবন্ধুর জন্মক্ষণের সাথে মিলিয়ে রাত আটটায় ‘মুজিব ভাই’র স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সীমিত পরিসরে আতশবাজি ও ফানুস উৎসব হবে। পাশাপাশি রাজধানীর হাতিরঝিল’সহ কয়েকটি স্থানেও সীমিত পরিসরে হবে আলোকউৎসব। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে যমুনা পরিবার।

গত ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন থেকেই জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও জনপরিসরে ক্ষণগণনার জন্য কাউন্টডাউন ঘড়ি বসানো হয়। সোমবার রাত ১২ বাজতেই সেই কাউন্টডাউন সমাপ্ত হলো।

বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীটি জাতীয় শিশু দিবসও। দিবসটি উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেসরকারি টিভি চ্যানেল এবং সংবাদপত্রগুলোর আছে বিশেষ আয়োজন। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তাঁর আদর্শ আমাদের চিরন্তন প্রেরণার উৎস। তাঁর নীতি ও আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে পড়ুক, গড়ে উঠুক সাহসী, ত্যাগী ও আদর্শবাদী নেতৃত্ব—এ প্রত্যাশা করি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার প্রত্যয়ে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply