ক্রেতাশূন্য বাজারেও পণ্যের বাড়তি দাম

|

দেশে করোনার মহামারী ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সরকারের নেয়া পদক্ষেপের কারণে বৃহস্পতিবার রাজধানী ছিল দৃশ্যত ফাঁকা। মানুষ ছিল আতঙ্কে। ফার্মেসি ও কাঁচাবাজার ছাড়া প্রায় সব দোকানপাট ছিল বন্ধ। কাঁচাবাজারের দোকানও ছিল তুলনামূলক কম। ক্রেতাও কম। তবে যারাই পণ্য কিনতে বের হয়েছেন তাদের কিছুটা বাড়তি দামেই ক্রয় করতে হয়েছে। ক্রেতা বলছিলেন, মানুষ কম থাকলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমেনি। বরং সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াবাজার, কারওয়ান বাজার ও মালিবাগ বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ১৮ টাকা। প্রতি কেজি ঢেঁড়স বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকায়, গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৫৫ টাকা। করলার বিক্রি হয়েছে ৭০-৭৫ টাকা কেজিতে, গত সপ্তাহে ছিল ৪০ টাকা। প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ২০-২৫ টাকা। ১০-১৫ টাকা বেড়ে প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকায়। এছাড়া কেজিতে ১০ টাকা করে বেড়ে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, কচুরলতি ৭০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩৫ টাকা। প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪৫-৫০ টাকা।

রাজধানীর নয়াবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. আলাউদ্দিন বলেছেন, কাঁচাবাজার খোলা থাকলেও সবজি সরবরাহ কিছুটা কমে গেছে। ফলে পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে ক্রয় করে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। সরবরাহ বাড়লে দাম আবার কমে যাবে। তিনি বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতেও সরকার কাঁচাবাজার খোলা রেখেছে। পণ্যবাহী পরিবহনও চালু আছে। তাই ক্রেতাদের চিন্তার কিছু নেই। দু-একদিনের মধ্যে দাম আবার ঠিক হয়ে যাবে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নয়াবাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে খুচরা চাল বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ দিন প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৫৫-৬০ টাকা, গত সপ্তাহেও একই দামে বিক্রি হয়েছে। নাজিরশাল বিক্রি হয়েছে ৬৪-৬৮ টাকা। বিআর ২৮ বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা কেজি।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, চালের দাম গত সপ্তাহের মতোই আছে। তবে ক্রেতা কমে গেছে। তিনি বলেন, এতদিন ক্রেতারা বাসায় চাল মজুদ করেছে। আগামী দু-একদিন যদি এমন চলতে থাকে তাহলে চালের মিলাররা দাম আবার কমিয়ে দেবে।

বাজারের মুদি দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ দিন প্রতি কেজি মসুরের ডাল (মাঝারি) বিক্রি হয়েছে ৭০-৭৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে একই দামে বিক্রি হয়েছে। খোলা আটা প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৩০-৩২ টাকা। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫৫ টাকা। একটু বড় আকারের পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হয়েছে। এক ডজন (১২ পিস) ফার্মের ডিম বিক্রি হয়েছে ১১৫ টাকা। প্রতি কেজি চিনি ৬৮-৭০ টাকা, শুকনা মরিচ ২৩০-২৪০ টাকা, দেশি রসুন ১৩০-১৪০ টাকা, দেশি আদা ১৪০-১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

অন্যদিকে বাজারে মাংসের দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি গরুর মাংস সর্বোচ্চ ৬০০ ও খাসির মাংস সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হয়েছে। তবে কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। এ দিন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১২০-১২৫ টাকা কেজি, গত সপ্তাহে ছিল ১৩০-১৩৫ টাকা।

রাজধানীর নয়াবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. শাকিল বলেন, করোনার প্রভাবে এতদিন সবাই বেশি বেশি পণ্য কিনে বাসায় মজুদ করেছে। বিক্রেতারা এ সুযোগে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত সেই বাড়তি দরেই বিক্রি হচ্ছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply