করোনাভাইরাস: শত দুঃসংবাদের মাঝেও কিছু ভালো খবর

|

মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে ভারত। সংক্রমণ সারা পৃথিবী জুড়ে বেড়েই চলেছে। ইতালি আমেরিকার মত দেশ করোনা মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে। দিনে দিনে বেড়েই চলেছে মৃত্যৃর হার। তবে এর মধ্যে কিছু ইতিবাচক খবর নিয়ে হাজির ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। বিবিসির প্রকাশিত সেই ভালো খবরগুলো হলো-

বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি হচ্ছে: সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে বৈজ্ঞানিকদের দিকে। কবে তারা করোনাভাইরাসের একটি টিকা তৈরি করবেন। যদিও বেশ কিছু টিকা তৈরি হচ্ছে। অবশ্য টিকা তৈরি হতে সময় লাগে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এক বছর থেকে ১৮ মাস সময়ের আগে এই টিকা প্রস্তুত হবে না।

তবে বিজ্ঞানীদের দ্রুত কাজে ভাইরাস সম্পর্কে আরও নতুন নতুন তথ্য জানা যাচ্ছে। যেমন এ সপ্তাহেই কোভিড-১৯ এর জেনেটিক কোড সম্পর্কিত এক গবেষণায় জানা গেছে যে এই সার্স-কোভ-টু ভাইরাস নতুন হোস্টের দেহে প্রবেশ করলে খুব কম সংখ্যক মিউটেশন হয়।

আর এ সবকিছু যদি ঠিক থাকে তাহলে একটি মাত্র টিকা দিয়েই একজন মানুষের দেহে দীর্ঘ দিনের জন্য রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে দেয়া যাবে। এটা টিকা প্রস্তুতকারকদের জন্য ভাল খবর বলে জানালেন বিশেষজ্ঞরা।

বিধিনিষেধ শিথিল করছে চীন: অনেকদিনের ভোগান্তির পরেও চীন বিশ্বাস করছে যে করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত জরুরি অবস্থাকে তারা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে এসেছে। স্থানীয়ভাবে হওয়া সংক্রমণ এখন খুবই কম। নতুন যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তারা বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আসা বলে জানিয়েছে চীনের গণমাধ্যমগুলো।

এর ফলে চীনে রোগ ছড়ানো ঠেকাতে যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল তা এখন শিথিল করা হচ্ছে। চীনের যে উহান শহর থেকে করোনাভাইরাস মহামারির সূচনা হয়েছিল – সেই শহরটি দুই মাসেরও বেশি সময় অবরুদ্ধ রাখার পর গতকাল তা আংশিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে। আগামী ৮ই এপ্রিল উহান শহর পুরোপুরি খুলে দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, রাজধানী বেইজিংয়ের মানুষ এখন মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে পারছে। অবশ্য নতুন করে সংক্রমণ শুরু হবার সম্ভাবনা এখনো আছে – কিন্তু চীন চেষ্টা করছে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে।

ঘুরে দাড়াচ্ছে ইতালি-স্পেন: ইতালি ও স্পেনে গত চারদিন ধরেই হয়তো পরিস্থিতির মোড় ঘুরতে শুরু করেছে। ইতালিতে নতুন সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা – দুটোই কমছে। দেশটির ডেপুটি স্বাস্থ্যমন্ত্রী পিয়েরপাওলো সিলেরি বিবিসিকে বলেন, আগামি ১০ দিনের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্য়া উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে বলে তিনি আশা করেন।

সর্বশেষ গত বুধবার নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬১২ জন যা গত চার দিনের তুলনায় কম। এর পর বৃহস্পতিবার সংখ্যা আবার বেড়েছে কিন্তু শুক্রবার চিত্রটা ছিল মিশ্র। এটাকে একটা আশাপ্রদ চিত্র বলেই মনে করছেন সেদেশের বিশেষজ্ঞরা। এদিকে স্পেনের কর্মকর্তারা মনে করেন যে, এ দুটি দেশে সংক্রমণ এখন সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে বা এর খুব কাছাকাছি চলে এসেছে।

বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা: বৈশ্বিক এ সংকট মোকাবেলায় সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডাক্তার, নার্স এবং অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। আমেরিকার জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, সারা পৃথিবীর ৫ লক্ষ আক্রান্তের মধ্যে ১ লক্ষ ৩০ হাজারের মতো লোক সেরে উঠেছেন। আবার অনেক দেশেই সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যখাতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দিচ্ছেন। যা পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিভূত করেছে এই সেক্টরে আশার জন্য।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply