করোনার সাথে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে যা করণীয়

|

ডায়াবেটিকদের বেলায় কোভিড-১৯ এর ছোবল অন্যদের তুলনায় বেশি মারাত্মক বলেই জানান বিশেষজ্ঞরা।

কোভিড এড়ানোর নিয়ম মানার সঙ্গে এই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো সুগারকে নিক্তির মাপে আনতে মেনে চলুন কিছু বিষয়।

সুগার ও সুগারজনিত বিপদ সামলাতে

• রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকলে যে ভাবে চলছিলেন, সে ভাবেই চলুন। ঘরে আছেন বলে ব্যায়াম যেন বন্ধ না হয়। কারণ এতে ওজন-ডায়াবিটিস যেমন বশে থাকে, বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও।

• জল বেশি খান। তাছাড়া সুগারের কিছু ওষুধ আছে যা খেলে জল বেশি না খেলে সমস্যা হতে পারে।

• ধূমপান করবেন না। কারণ করোনাভাইরাস যে রিসেপ্টার দিয়ে শরীরে ঢোকে, ধূমপান করলে ওই রিসেপ্টার বেশি সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে।

• অনেক ডায়াবেটিক রোগীরই রক্তচাপ বেশি থাকে। অনেকেই ভুয়া তথ্যে ভরসা করে ডায়াবিটিসের যেসব ওষুধের নামের শেষে ‘প্রিল’ বা ‘সার্টান’ আছে, সে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিচ্ছেন। এতে কিন্তু মারাত্মক বিপদ হতে পারে। কারণ কোনও গাইডলাইনেই কিন্তু এখনও পর্যন্ত এটা বলা হয়নি যে এ সব ওষুধে কোভিডের আশঙ্কা বাড়ে। যদি গাইডলাইনে আসে তখন তা জানিয়ে দেওয়া হবে।

• টেনশন করবেন না। যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে কথাটা বলা যত সহজ, করা ততটা নয়। তবু চেষ্টা করুন। কারণ টেনশন করলে লাভ তো হবেই না, বরং এতে ডায়াবিটিস যেমন বেড়ে যেতে পারে, কমতে পারে সবারই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও।

• সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি হলেও ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ খাবেন না। কারণ নানা ওষুধের নানা বিরূপ প্রতিক্রিয়া আছে ডায়াবিটিসের উপর।

• ডায়াবিটিস কোনও কারণে বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তার পাশাপাশি খাওয়াদাওয়া বুঝে করুন। ভাত-রুটি কম খেয়ে সবুজ শাক-সব্জি খাওয়া বাড়ান। হাঁটাহাটি ও ব্যায়াম বাড়ান।

• ডায়াবেটিস কিটো অ্যাসিডোসিস বা ‘ডিকেএ’ হলে অনেক সময় শ্বাসকষ্ট হয়। সেটাকে কোভিডের উপসর্গের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না। যদিও ডিকেএ-ও যথেষ্ট বিপজ্জনক।

• ওষুধ, ইনহেলার হাতের কাছে রাখুন।

ডায়াবেটিকদের কোভিড-১৯ ঠেকানোর নিয়ম।

সবার যা যা করার কথা, আপনিও তাই করবেন। তবে একটু বেশি সতর্কতার সঙ্গে। যেমন:

• দিনে ৫-৬ বার হাত ধুবেন। কোনও কারণে বাইরে যেতে হলে ঘরে এসে ভালো করে হাত ধুয়ে নেবেন। আর স্যানিটাইজার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন যাতে এতে ৭০ শতাংশের বেশি অ্যালকোহল থাকে।

• রান্না, পরিবেশন ও খাওয়ার আগে হাত ভাল করে ধুয়ে নিন। নিজের থালা-বাটি-গ্লাস আলাদা করে নিন। কারও শ্লেশ্মাজনিত অসুখ হলে দরকারে জামা-কাপড়-তোয়ালেও আলাদা করতে হবে।

• নিতান্ত অপারগ না হলে রাইরে যাবেন না। অন্যরা একটু অনিয়মের ধকল সামলাতে পারলেও, আপনি হয়তো নাও পারতে পারেন। কাজেই কিছু জিনিস বেশি করে কিনে রাখুন। যেমন: পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর খাবার, শাক-সবজি, ফল, চিকেন, মাছ, ডিম, ব্রাউন রাইস, হোল গ্রেন বা মাল্টি গ্রেন আটা ইত্যাদি।

• হাতের কাছে চিনি-বাতাসা, মধু, ফলের রস, চকলেট জাতীয় মিষ্টিও কিছু রাখবেন। যদি হঠাৎ ডায়াবিটিস খুব কমে যায়, তখন কাজে আসবে।

• প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ইনসুলিন কিনে রাখুন। মেশিনে সুগার মাপার স্ট্রিপ কিনে রাখুন।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply