আরেক উহান হয়ে উঠছে পাকিস্তানের মুলতান

|

করোনা মহামারীতে পাকিস্তানের মুলতানে এখন চীনের উহানের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দেশের উত্তরে পাঞ্জাব প্রদেশের এ শহরটিতে সাধারণ মানুষের চেয়ে চিকিৎসক ও নার্সরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে লড়াইরত অন্তত ৩০ স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা ধরা পড়েছে। ২৬ জন ডাক্তারসহ এ তালিকায় রয়েছেন তিন নার্স ও এক প্যারামেডিক সদস্য। মহামারীর শুরুর দিকে করোনার উৎপত্তিস্থল হিসেবে পরিচিত চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহানে যেমনটা হয়েছিল। মুলতানকে তাই উহানের সঙ্গে মেলানো হচ্ছে।

যতই দিন যাচ্ছে, শহরটি আরেক উহান হয়ে উঠছে। প্রায় চার মাসের করোনাবিরোধী যুদ্ধে চীনে ৩ হাজারের বেশি ডাক্তার ও নার্স আক্রান্ত হয়েছেন। এর অর্ধেকই উহানের; যার প্রথম শিকার হয়েছিলেন হুইসেল ব্লোয়ার খ্যাত লি ওয়েনলিয়াং। দ্য ন্যাশন ও নিউইয়র্ক টাইমস।

পাকিস্তানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুও। সরকারি তথ্যের ভিত্তিতে ডন জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত পাকিস্তানে মরণ ভাইরাসের বলি হয়েছেন ১১৭ জন। সংক্রমণের সংখ্যা ৬২৯৭। আক্রান্তের তালিকা দীর্ঘ করার পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে পাঞ্জাব প্রদেশ।

এ প্রদেশেই আক্রান্ত ৩০১৬ জন। পুরো পাকিস্তানে সংক্রমণ ও মৃত্যুর দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে মুলতান। শহরের হাসপাতালগুলোতে স্রোতের মতো আসছে কোভিড-১৯ এর রোগী। চিকিৎসা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।

মহামারীর বিস্তার, সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যার বাড়বাড়ন্তের বিষয়টি মাথায় রেখে মুলতান শহরের ‘নিসতার হসপিটালে’ ৫০০ শয্যার নতুন একটি আইসোলেশন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার।

প্রাদেশিক সরকারের জ্বালানিমন্ত্রী ড. আখতার মালিক সাংবাদিকদের বলেছেন, আইসোলেশন কেন্দ্রে চিকিৎসার সমস্ত সরঞ্জাম ও সুবিধা থাকবে। ইতোমধ্যে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় করোনা কোয়ারেন্টিন সেন্টারটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে মুলতানেই। ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট অব মুলতানের লেবার ওয়েলফেয়ার কমপ্লেক্স ভবনটিকেই আইসোলেশন কেন্দ্র করা হয়েছে। সেখানে তাবলিগ জামাতের অন্তত ১ হাজার ২০০ সদস্যকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।

বুধবার ইসলামাবাদে এক সাংবাদিক বৈঠকে পাকিস্তানের পরিকল্পনামন্ত্রী আসাদ উমর বলেন, আমরা খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলেছি। সংক্রমণের হারে রাশ টানা সরকারের মূল লক্ষ্য। একই সঙ্গে নিন্মআয়ের লোকজন যাতে ক্ষুধার্ত না থাকেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।

এ দুই বিষয়ের মধ্যে ভারসাম্যের সূত্র সন্ধান সরকারের কাছে মূল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংক্রমণের শৃঙ্খলা ভাঙতে পাকিস্তানে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার এ কথা ঘোষণা করেন ইমরান খান। স্তব্ধ অর্থনীতিতে গতি সঞ্চারে বিভিন্ন শিল্প সংস্থায় কাজ চালু করার ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply