জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া সেই মায়ের কাছে গেলেন ‘লজ্জিত’ পুত্র

|

টাঙ্গাইলের সখীপুরে জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া সেই নারীকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেছেন তার ছেলে সানোয়ার হোসেন। বৃহস্পতিবার মায়ের সঙ্গে দেখা করেন এবং রাতে মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে অবস্থানের কথা জানান।

বৃহস্প‌তিবার বি‌কেল ৫টার দি‌কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢা‌মেক) হাসপাতালের আই‌সো‌লেশন ওয়া‌র্ডে সা‌নোয়ার তার মা সা‌জেদা বেগ‌মের স‌ঙ্গে দেখা ক‌রেন। তার দাবি- আমার মা একজন মানসিক রোগী। তিনি গত ২৩ মার্চ শেরপুরের শ্রীবর্দী উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন।

গত ১৪ এ‌প্রিল করোনা সন্দেহে নারীকে স্বামী-সন্তানরা বনে ফেলে রে‌খে যাওয়ার খবর আলোড়ন তুলে। এ নিয়ে বুধবার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। তিনি সবাইকে মানুবিক আচরণ করার কড়া বার্তা দেন। এমন আমানবিক ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।

মঙ্গলবার টেলিভিশনে ছবি দেখে সানোয়ার তার মাকে শনাক্ত করেন বলে জানান। তার কথা, আমি আমার মাকে করোনার ভয়ে সখীপুরে বনে ফেলে যাইনি। তবে আমার মায়ের প্রতি আমাদের পরিবারের অবহেলা ছিল। আমি গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করি। এ কারণে নি‌খোঁজ হওয়ার পরও মাকে খুঁজতে সময় দিতে পারিনি।

দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান সানোয়ার। বলেন, আমি খুবই লজ্জিত। আপনারা আমাকে ভুল বুঝবেন না। একইসাথে সখীপুরের ইউএনও, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

গত ১৩ এ‌প্রিল রা‌তে সখীপু‌রে বন থে‌কে উদ্ধার হওয়ার পর ওই ম‌হিলা জানান, তার বাড়ি শেরপুর জেলার নালিতা বাড়িতে। তার স্বামী-সন্তান গাজীপুরের সালনায় পোশাক কারখানায় কাজ করেন। করোনাভাইরাস সন্দেহে রাতের আঁধা‌রে তাকে জঙ্গলে ফেলে রেখে পা‌লি‌য়ে গে‌ছে স্বামী-সন্তানরা। প‌রে উপ‌জেলা নির্বাহী অ‌ফিসার‌ (ইউএনও) আসমাউল হুসনা লিজা ওই নারীকে রাতেই ঢাকায় হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

ঢাকা মেডিকেল সূত্রে জানা গেছে ওই নারী ক‌রোনা ‌রি‌পোর্ট নেগে‌টিভ এসেছ অর্থাৎ তিনি আক্রান্ত নন। ত‌বে তার কিছুটা মান‌সিক ভারসাম্যহীনতা দেখেছেন চিকিৎসকরা।

সানোয়ার হোসেন জানান, তার ফে‌লে রে‌খে যাওয়ার কথা কেনো বলেছেন তিনি জিজ্ঞেস করেছেন। মা কোনো উত্তর দেননি। তবে মা তাকে পেয়ে খুশি হয়েছে। মায়ের সঙ্গে একটা সেলফি তুলেন বোধোদয় হওয়া পুত্র সানোয়ার।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply