মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে অ্যাম্বুলেন্স চালকরা

|

দেশে করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের সময় ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী ছাড়াই বেশির ভাগ অ্যাম্বুলেন্স চালক রোগী আনা-নেয়া করছেন। করোনা রোগী পরিবহনে তাদের কোনো বিশেষ প্রশিক্ষণ নেই। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের নিরাপত্তায় কার্যকর কোনো উদ্যোগও নেয়া হয়নি। দেশের অ্যাম্বুলেন্সগুলোও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে করোনা রোগী পরিবহনের উপযুক্ত নয়। এ অবস্থায় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। শেরপুরে এরই মধ্যে এক অ্যাম্বুলেন্স চালক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। অ্যাম্বুলেন্স মালিক ও চালকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

অ্যাম্বুলেন্স চালকদের বাসা ছেড়ে দিতে বলছেন ঢাকার বিভিন্ন বাড়িওয়ালা। অনেক স্থানে অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়াতে দেয়া হচ্ছে না। অনেক সময় করোনা আক্রান্ত রোগী তথ্য গোপন করায় অ্যাম্বুলেন্স চালকদের ঝুঁকি বাড়ছে। অ্যাম্বুলেন্স মালিক ও চালকরা জানান, ঢাকা মহানগর অ্যাম্বুলেন্স সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্য সংখ্যা এক হাজার ৩৭ জন। সংগঠনটির দুই হাজার ৮০টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। দেশের ৯০ শতাংশ রোগী তারা পরিবহন করেন। করোনা রোগী পরিবহনে এখনও তারা সেভাবে প্রস্তুত নন। চালকদের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েও তারা শঙ্কিত।

২২ মার্চ অ্যাম্বুলেন্স সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর একটি চিঠি দেয়া হয়। যেখানে বলা হয়, অ্যাম্বুলেন্স চালক ও সহযোগীরা স্বল্পশিক্ষিত এবং তাদের সচেতনতা বোধ খুবই কম। ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, অ্যাম্বুলেন্স চালক বা সহযোগী করোনায় আক্রান্ত হলে এবং তা প্রচার হলে এ কাজ ধরে রাখা খুব কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। ফলে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা দেয়া হুমকির মুখে পড়বে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে চালকদের জন্য সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ, মাস্ক, পোশাক উপকরণ এবং হাত ধোয়ার জন্য স্যানিটাইজার দিয়ে সহযোগিতা করা জরুরি।

ঢাকা মহানগর অ্যাম্বুলেন্স সমবায় সমিতির সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, চিঠি দেয়ার পরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ফরিদুল ইসলাম জানান, তার ১৫টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। একজন চিকিৎসক তাদের কিছু পিপিই দিয়েছেন। কিন্তু তা সবাইকে দিতে পারেননি। তাই বাকিদের রেইনকোট কিনে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. শাহরিয়ার নবী বলেন, অ্যাম্বুলেন্স চালকরা স্বাস্থ্যকর্মী পর্যায়ের। তারা রোগী পরিবহনে সরাসরি যুক্ত। তাদের অবশ্যই পিপিই লাগবে। আর প্রতিবার রোগী পরিবহনের পর অ্যাম্বুলেন্স জীবাণুমুক্ত করতে হবে। তা না হলে সামনে আমরা বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়ব।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply