গাছগুলো কি ‘উন্নয়নের বলি’ হবেই?

|

এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত হতে যশোর রোডের ১৭০ বছরের পুরনো গাছগুলো কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। যদিও বিকল্প হিসেবে প্রায় ৫ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করার পক্ষে দাবি উঠেছে। কিন্তু আড়াই হাজার গাছ রক্ষায় সে চ্যালেঞ্জে না গিয়ে ২০১৯ সালের মধ্যেই সেগুলো কেটে ফোর-লেন রাস্তা তৈরির পক্ষে প্রকল্প কর্তারা।

যশোর রোডের সবুজ আচ্ছাদনের পরতে পরতে ঘুমিয়ে আছে ইতিহাস। সেই অতীত অহংকারের, জাতির গর্বিত এক অধ্যায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ পথেই লাখ লাখ শরণার্থী আশ্রয় নেন ভারতে। তখনও ছায়া বিলিয়েছে রেইনট্রিগুলো। পশ্চিমা কবি অ্যালেন গিন্সবার্গের কবিতা- সেপ্টেম্বর অন যশোর রোডে বলা আছে উত্তাল সেই সময়ের কথা।

আড়াই হাজার গাছে মধ্যে একটি বড় অংশের বয়স এখন- ১৭০ বছর! অতীতে লোভের কুঠার বারবার চোখ রাঙালেও টিকে গেছে। কিন্তু এবার এশিয়ান হাইওয়ের অন্তর্ভুক্ত হতে এ বিশাল সংখ্যক গাছ নির্মূলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

তবে সাধারণ মানুষ দাঁড়িয়েছেন এর বিপক্ষে। সামাজিক মাধ্যমে চলছে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড়। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, ভারতের অংশে গাছ রেখে ফোর লেন রাস্তা বানানো সম্ভব হলে আমাদের কেন সম্ভব না?

গত ৩১ ডিসেম্বর প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। তারপর সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ আর সড়ক বিভাগ কয়েক দফার বৈঠকও করেছে। তারা সবাই মিলে গাছ কেটে রাস্তা বানানোর পক্ষেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

যশোর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল বলেন, আমাদের বৈঠকে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাস্তার কাজ শেষে আবারও নতুন করে বনায়ন করা হবে।

গাছ কাটার বিকল্প যে নেই, তা নয়। জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে সড়ক প্রশস্ত করা যায়। কিন্তু প্রায় ৩২৯ কোটি টাকার এই প্রকল্পের জন্য এ বিকল্পটি প্রথম থেকেই বিবেচনায় নেয়া হয়নি। ভারত অংশে কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় ২০১৯ এর মধ্যে বাংলাদেশ ফোরলেন প্রকল্প শেষ করতে চায়।

ইতিহাসের সাক্ষী ও নৈসর্গিক পরিবেশ তৈরি করা গাছগুলোকে বিভাজক হিসেবে রেখে ফোর-লেন এর কাজ করার পক্ষে সচেতন নাগরিক ও পরিবেশ আন্দোলন কর্মীরা।

 

 


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply