কৃষক ও ছাত্রলীগকে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন

|

করোনা মহামারির সময়ে বোরো ধানের বাম্পার ফলন আর্শীবাদ হয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য কৃষকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। ধান কাটা-মাড়াইয়ে কৃষকের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি ছাত্রলীগকেও অভিনন্দন জানান।

রোববার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করতে বলেন। এছাড়া সংকটে সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপও তুলে ধরেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, চলতি মৌসুমে ২২.২৫ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হবে। যা গত বছরের তুলনায় দুই লাখ মেট্রিক টন বেশি। এই দুর্যোগ মুহূর্তে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য আমি কৃষক ভাইবোন এবং কৃষির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন ও ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলাম ধান কাটা-মাড়াইয়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে। আমার নির্দেশ শিরোধার্য করে নিয়ে তারা কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে। একইসঙ্গে কৃষকলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ধান কাটায় সহায়তা করেছেন। এজন্য কৃষকদের কোনো অর্থ ব্যয় করতে হয়নি। কৃষকেরা দ্রুত ধান ঘরে তুলতে পেড়েছেন। আমি এসব ছাত্রলীগ কর্মীসহ যারা কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের অভিনন্দন জানাই।

বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে আসা এবারের ঈদ সবাইকে ঘরে থেকেই উদযাপন করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া স্বাস্থ্য সতর্কতায় কোনো ঢিলা না দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি সবাইকে ‘ঈদ মুবারক’ জানান। বললেন, প্রাণঘাতী করোনা সারা বিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। তার উপর ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এ বছর সব ধরনের গণ-জমায়েতের উপর বিধিনিষেধ আরোপের ফলে স্বাভাবিক সময়ের মতো এবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করা সম্ভব হবে না।

ঈদগাহ ময়দানের পরিবর্তে মসজিদে মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছর আমরা সশরীরে পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হতে বা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে না পারলেও টেলিফোন বা ভার্চুয়াল মাধ্যমে আত্মীয় স্বজনের খোঁজখবর নেব।

সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ঈদের আগে স্বাস্থ্যবিধি এবং অন্যান্য নিয়মনকানুন মেনে কিছু কিছু দোকানপাট খুলে দেয়ার অনুমোদন দিয়েছি। যারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন এবং যারা দোকানে কেনাকাটা করতে যাচ্ছেন, আপনারা অবশ্যই নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন। ভিড় এড়িয়ে চলবেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, আপনার সুরক্ষা আপনার হাতে। মনে রাখবেন আপনি সুরক্ষিত থাকলে আপনার পরিবার সুরক্ষিত থাকবে, প্রতিবেশী সুরক্ষিত থাকবে, দেশ সুরক্ষিত থাকবে।

মহামারির মধ্যে ঈদ উদযাপনে ধনবানদের অন্যদের পাশের দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এই দুঃসময়ে আপনি আপনার দরিদ্র প্রতিবেশী, গ্রামবাসী বা এলাকাবাসীর কথা ভুলে যাবেন না। আপনার যেটুকু সামর্থ্য আছে, তাই নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ান। তাহলেই ঈদের আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে আপনার ঘর এবং হৃদয়-মন।

এসময় চিকিৎসক, নার্সসহ যে স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সেবা করছেন, তাদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা, যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ত্রাণসামগ্রী বিতরণসহ সরকারের নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন, তাদেরও শুভেচ্ছা জানান তিনি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply