বিতর্কের তুঙ্গে ঐতিহাসিক ‘হায়া সোফিয়া’; ১৫ দিনের মধ্যেই নির্ধারিত হবে ভবিষ্যত

|

১৪শ’ বছরের ইতিহাসে, বাইজেন্টাইন সভ্যতার প্রধান গির্জা, অটোমান সাম্রাজ্যের মসজিদ আর আধুনিক তুরস্কের ঐতিহাসিক ‘হায়া সোফিয়া’কে মসজিদে রূপান্তর নিয়ে পর্যবেক্ষণ, শুনানি হয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালতে। ষষ্ঠ শতকের স্থাপনাটি নিয়ে এখন তুরস্কের অভ্যন্তরীণ মহলে বিতর্ক তুঙ্গে। ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থাপনাটির পরিবর্তন নিয়ে মিশ্র অনুভূতি তুর্কিদের মাঝে। একপক্ষ নামাজের সুযোগ চাইলেও, জাদুঘরই থাকুক- চান উদারপন্থিরা। ১৫ দিনের মধ্যেই হায়া সোফিয়ার ভবিষ্যত নিয়ে আসতে পারে কাউন্সিল অব স্টেটের রায়।

কিন্তু, মসজিদে রূপান্তরে আপত্তি অর্থোডক্স খ্রিষ্টানদের। তাদের দাবি, গীর্জা হিসেবেই গড়ে উঠেছিল হায়া সোফিয়া। একে মসজিদের রূপ দেয়া হলে আহত হবে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতি, উস্কে দেবে বিতর্ক। রূপান্তরের তীব্র বিরোধিতা করেছে গ্রিস এবং যুক্তরাষ্ট্রও।

তুরস্কের অর্থোডক্স গুরু আর্চবিশপ বার্থলোমিউ বলেন, হায়া সোফিয়া ৯শ’ বছর ব্যবহৃত হয়েছে খ্রিষ্টানদের উপাসনালয় হিসেবে। তারপর সেখানে মুসলিমরা নামাজ আদায় করেছেন পাচশ বছর। এ ধরণের পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে খ্রিষ্টান ও মুসলিমদের মুখোমুখি দাঁড় করাবে।

মসজিদে রূপান্তর হলেও ভ্রমণপিপাসুদের জন্য হায়া সোফিয়াকে উন্মুক্ত রাখার পক্ষে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। অবশ্য একই সাথে জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মহলের এই বিষয়ে কথা বলার অধিকার নেই। চলমান বিতর্ককে এরদোগানের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের কৌশল বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।

তুরস্কের রাজনৈতিক বিশ্লেষক সোনার ক্যাগাপতি বলেন, আমার মনে হয়, জনপ্রিয়তায় কিছুটা ভাটা পড়ায় ইস্যুটি ব্যবহার করছেন এরদোগান। মুসলিম জাতীয়তাবাদের পরিচয় ব্যবহার করে নিজের অবস্থান জোরালো করতে চাইছেন।

সম্রাট জুস্টিনিয়ানের তত্ত্বাবধানে অর্থোডক্স গীর্জা হিসেবে গড়ে উঠেছিল হায়া সোফিয়া। মুসলিমরা ইস্তাম্বুল জয়ের পর মসজিদে রূপান্তর করা হয় ১৪৫৩ সালে। ১৯৩৫ সালে মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক জাদুঘরে রূপান্তর করেন একে। দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে নামাজ আদায়ের দাবি জানিয়ে আসছে তুর্কি মুসলিমরা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply