বন্যা পরিস্থিতি: উত্তর আর মধ্যাঞ্চলে সুখবর নেই

|

এখনও বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র আর যমুনা নদীর পানি। একই পরিস্থিতি পদ্মারও। তাই আপাতত উত্তর আর মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির কোন পূর্বাভাস মিলছে না। পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের কোনো কোনো জেলা-উপজেলায় নিম্নাঞ্চল ছাপিয়ে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে শহরাঞ্চলেও। এই কঠিন পরিস্থিতিতেও ত্রাণের পরিমাণ অপ্রতুল। সব মিলিয়ে বানভাসিরা চরম সংকটে দিন পার করছে।

চলতি মৌসুমে এটি তৃতীয় দফায় বন্যা হচ্ছে। এবারের এ বন্যা তুলনামূলকভাবে ভয়াবহ। কেননা উত্তরাঞ্চলের নদী তিস্তায় এবারের বন্যায় এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৫৩ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়েছে। এর আগে ২০১৭ সালে পানির সমতল সর্বোচ্চ উঠেছিল ৫৩ মিটার ১২ সেন্টিমিটার। গত একশ বছরের মধ্যে সেটাই ছিল এ নদীতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পানিপ্রবাহ। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এবারে এ পানি প্রবাহই প্রমাণ করে যে এবারের বন্যা কতটা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আর এবারের বন্যা প্রায় ৪০ দিন স্থায়ী হতে পারে- এমন আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তাদের মতে, ভয়াবহ বন্যার একমাত্র কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব।

লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাসহ ব্রহ্মপুত্র তীরবর্তী জনপদ ও চরাঞ্চল তলিয়ে গেছে। শুধু জামালপুরেই পানিবন্দি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে পানিবাহিত রোগ। বন্যার পানিতে ডুবেছে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুরসহ মানিকগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা। বাড়িঘর তো তলিয়েছেই, অনেক জায়গায় ডুবে গেছে আঞ্চলিক সড়কও। অনেকে তাদের গবাদি পশু নিয়ে উঁচু সড়ক ও সেতুতে আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ খোলা আকাশের নিচে অসহায় জীবন যাপন করছে। দিনভর ত্রাণের আশায় তাকিয়ে থাকলেও তা অনেকের ভাগ্যেই মিলছে না। কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে পানীয় জলের সংকট।

বন্যার সাথে বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বিলীন সদরের কামারজানি ইউনিয়নের একটি প্রাচীন মন্দির। এছাড়া নদের বুকে এরইমধ্যে চলে গেছে অর্ধশতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি-আবাদি জমি। মাদারীপুরেও ভাঙন অব্যাহত। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিবচর উপজেলা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply