মিনিটে দশ লাখ টন বরফ গলছে গ্রিনল্যান্ডে

|

রেকর্ড হারে গলে যাচ্ছে গ্রিনল্যান্ডের বরফের চাঁই। গত বছর তথা ২০১৯ সাল থেকে প্রতি মিনিটে দশ লাখ টন বরফ হারাচ্ছে ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত এই দ্বীপদেশটি। নতুন এক গবেষণা রিপোর্টে ভয়ানক এই তথ্য উঠে এসেছে। অতিদ্রুত বরফ গলে যাওয়াকে বিষয়টি বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির মারাত্মক প্রভাবের অন্যতম বড় লক্ষণ হিসেবে দেখছেন গবেষকরা। খবর সিএনএন ও দ্য গার্ডিয়ানের।

নামে গ্রিনল্যান্ড হলেও বাস্তবে উত্তর গোলার্ধের এই বিশাল দ্বীপটি পুরু স্তরের বরফে ঢাকা। তাই এটাকে ‘হোয়াইটল্যান্ড’ও বলা হয়। জলবায়ু পরিবর্তন ও পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় গত কয়েক বছর ধরেই এর বরফের চাইগুলো গলে যাচ্ছে। সম্প্রতি যতই দিন যাচ্ছে এই গলন প্রক্রিয়া ততই ত্বরান্বিত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার খ্যাতনামা জলবায়ু ও পরিবেশ বিষয়ক জার্নাল কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে দ্বীপটির বরফ গলা নিয়ে নতুন ও ভীতিকর তথ্য দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে গ্রিনল্যান্ডের ৫৩ হাজার ২০০ কোটি টন বরফ গলে গেছে, যা এ যাবৎকালের মধ্যে রেকর্ড। এর মধ্যে ওই বছরের জুলাই মাসেই গলেছে ২২ হাজার ৩০০ টন। গ্রিনল্যান্ডে সাধারণত জুলাই মাসে ব্যাপক হারে বরফ গলার দৃশ্য দেখা যায়। কিন্তু গত বছর জুন মাসের মাঝামাঝিতেই অস্বাভাবিকভাবে বরফ গলতে শুরু করে। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী টমাস মোটি বলেন, ‘হঠাৎ করে বিপুল পরিমাণ বরফ গলার ঘটনাটি অস্বাভাবিক, তবে অভূতপূর্ব নয়।

রিপোর্ট মতে, ২০১৯ সালের তুলনায় আগের বছরগুলোতে অপেক্ষাকৃত অনেক কম বরফ গলেছে। এক হিসাবে, ২০০৩ ও ২০১৬ সালের মধ্যে প্রতিবছর গড়ে ২৫ হাজার ৫০০ টন বরফ হারিয়েছে গ্রিনল্যান্ড। এ ব্যাপারে আলফ্রেড ওয়েগনার ইন্সটিটিউট ফর পোলার অ্যান্ড মেরিন রিসার্চের গবেষক ও গবেষণা রিপোর্টটির সহ-লেখক ইঙ্গো সাসজেন বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ডে বরফ গলার আরও একটা রেকর্ড নথিভুক্ত করলাম আমরা।’

গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে এ নিয়ে বহু গবেষণাও চলছে। গত সপ্তাহেই আরও একটি গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।

তাতে বলা হয়েছে, গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলন এমন স্তরে পৌঁছে গেছে যেখান থেকে আর কখনও সরে আসা সম্ভব নয়। এটা ক্রমেই আরও দ্রুতগতির হচ্ছে।’


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply