ঘটনাস্থলে ছিলেন না, আছেন মামলায়!

|

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে না থেকেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির আহমেদকে একটি হত্যা মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর ওই হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান কবির। তিনি নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তাকে ওই ‘ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা মামলা’ থেকে অব্যাহতি দেওয়াসহ দ্রুত মুক্তি দেওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার ছোটভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এইচ.এম. আল আমিন আহমেদ।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এইচ.এম.আল আমিনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বীরগাঁও ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান।

লিখিত বক্তব্যে আবদুল মান্নান বলেন, নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, বীরগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের স্থগিত কমিটি সভাপতি হোসেন সরকার ও সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন নবীনগরের বর্তমান সাংসদের প্রভাব খাটিয়ে বীরগাঁও ইউনিয়নের বাইশমৌজা বাজার দখল এবং আশুগঞ্জ-নবীনগর রাস্তার কাজ ভাগ-বাটায়োরা করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন।

কিন্তু তাদের এসব অপকর্মের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান চেয়ারম্যান কবির আহমেদ। তাই তাদের রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তিকে আরও মজবুত করতে চেয়ারম্যান কবির আহমেদ ও তার আরেক ভাই জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক এস.এম আলমগীর হোসেনকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়।

তিনি বলেন, কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের থানাকান্দি, গৌরনগর, সাতঘরহাটি ও উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামে প্রায় তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে গ্রাম্য ও গোষ্ঠীগত আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘাত লেগে আছে। এরই জের ধরে গত ১২ এপ্রিল থানাকান্দি গ্রামের মোবারক হোসেন নামে এক ব্যক্তির পা কেটে নিয়ে নগ্ন উল্লাস করে প্রতিপক্ষের লোকজন। পরবর্তীতে মোবারক মারা যান।

তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের দিন করোনাভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষদের মাঝে সরকারি ত্রাণ সহায়তা বিতরণের জন্য বীরগাঁও ইউনিয়নের নিজ গ্রামে অবস্থান করেছিলেন চেয়ারম্যান কবির আহমেদ। আলমগীর হোসেনও তার নিজ বাসা ও ব্যবসার স্থান আশুগঞ্জ উপজেলায় ছিলেন।

কিন্তু হত্যা মামলায় চেয়ারম্যান কবির আহমেদ ও তার ভাই আলমগীর হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের করা মামলার কথা উল্লেখ করে আবদুল মান্নান আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের পরদিন নবীনগর থানা পুলিশ বাদি হয়ে দুই পক্ষের দলনেতাকে ১ ও ২ নম্বর আসামি করে ১০৬ জন এবং অজ্ঞাত আরও ৭০০/৮০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। কিন্তু ওই মামলার এজাহারে চেয়ারম্যান কবির আহমদ ও তার ভাই আলমগীর হোসেন এর নাম নেই।

এছাড়া মৃত্যুর আগে মোবারক তার উপর হামলাকারীদের নাম বলে গেছেন, সেখানেও কবির ও আলমগীরের নাম নেই।

এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হস্তক্ষেপ কামনা করে কারান্তরীণ ইউপি চেয়ারম্যান কবির আহমেদের মুক্তির পাশাপাশি মামলা থেকে তাকে ও তার ভাই আলমগীর হোসেনকে অব্যাহিত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আল আমিন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply