যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন: প্রার্থীর মৃত্যু হলে নির্বাচনের কী হবে

|

নির্বাচনের মাত্র এক মাসের কম সময় বাকি থাকতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও শীর্ষ একজন প্রার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ায় নানা প্রশ্ন উঠছে যুক্তরাষ্ট্রে। এর মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগজনক প্রশ্নটি হল- যদি একজন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী, বা নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব গ্রহণের আগে প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট মারা যান অথবা দায়িত্ব পালনে অক্ষম হয়ে পড়েন তাহলে কী হতে পারে? যদিও করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উপসর্গগুলো তেমন জোরাল নয় বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজের চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডোজ। বেশির ভাগ আমেরিকানও মনে করছেন দ্রুত করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হয়ে শিগগিরই প্রচারে ফিরবেন তাদের প্রেসিডেন্ট।

প্রার্থীর মৃত্যু বা অক্ষমতাজনিত কীভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে- মার্কিন সংবিধান, আইন ও দলীয় নিয়ম-নীতিতে বিষয়গুলো বলা আছে। প্রার্থীর মৃত্যু বা অক্ষম হয়ে পড়ার কারণে নির্বাচন স্থগিত করা যায়। তবে সেটি ঘটার সম্ভাবনা অনেক কম। মার্কিন সংবিধান কংগ্রেসকে ক্ষমতা দিয়েছে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের। সে ক্ষেত্রে প্রতি চার বছর পর নভেম্বর মাসের প্রথম সোমবারের পরের মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ করতে হয়। রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেট নির্বাচন পেছানোর প্রস্তাব আনতে পারে। তবে ডেমোক্রেটিক নিয়ন্ত্রিত হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস নির্বাচন পেছানোর ক্ষেত্রে তীব্র আপত্তি তুলবে। কখনও মার্কিন নির্বাচন পেছানোর ঘটনা ঘটেনি।

নির্বাচনের আগে যদি কোনো প্রার্থী মারা যায় তাহলে কী হবে? এক্ষেত্রে যে দলের প্রার্থী মারা যাবে তাদের দলীয় রুলিং অনুযায়ী একজন প্রার্থী মনোনয়নের জন্য সদস্যদের কাছে ভোট আহ্বান করা হবে। তবে এ জন্য বর্তমান পরিস্থিতি অনুকূলে নেই।

কারণ, নির্বাচন প্রক্রিয়া অনেক এগিয়েছে। আগাম ভোট চলমান। এরই মধ্যে দুই কোটি ২০ লাখ ভোট গ্রহণ হয়ে গেছে বলে ফ্লোরিডা ইউনিভার্সিটির ইলেকশন প্রজেক্ট জানিয়েছে। অনেক রাজ্যে ব্যালট পরিবর্তনের শেষ তারিখ পার হয়ে গেছে। করোনার কারণে ডাকে ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে ২৪টির বেশি রাজ্যে ডাক ব্যালট পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

কংগ্রেস যদি ভোট না পেছায় তবে ৩ নভেম্বরের আগে কোনো প্রার্থী মারা গেলেও ভোটাররা তাকে ভোট দিতে পারবেন। তবে মৃত ব্যক্তি বিজয়ী হলে নতুন প্রশ্ন সামনে আসবে। যদি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের আগে কোনো প্রার্থী মারা যান তাহলে সুপ্রিমকোর্ট কিভাবে বিষয়টি সমাধান করে সেটা দেখার বিষয় হবে। মার্কিন নিয়ম অনুযায়ী জয়ী হতে হলে মোট ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে ২৭০টি পেতে হয়। প্রত্যেক রাজ্যে জনপ্রিয় ভোটে বিজয়ীকে সে রাজ্যের সবগুলো ইলেক্টোরাল ভোট দেয়া হয়ে থাকে। ১৪ ডিসেম্বর ইলেক্টোরাল কলেজ এর মিটিং হবে।

ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটের পর কিন্তু কংগ্রেসের সত্যায়নের আগে বিজয়ী মারা গেলে কী হবে? সে ক্ষেত্রে ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসের অধিবেশনের আগে মারা গেলে কী হবে তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। মার্কিন সংবিধানের ২০তম সংশোধনীতে বলা আছে, এক্ষেত্রে ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট হবেন। তবে এটি নিয়ে নানা আইনি ব্যাখ্যা ও বিতর্ক আছে। নির্বাচিত হয়ে কংগ্রেসের সত্যায়নের পর শপথ নেয়ার আগে মারা গেলে কী হতে পারে? সংবিধান অনুযায়ী, ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট শপথ নেন ও অভিষেক হয়। এটি হয় কংগ্রেসের সত্যায়নের দুই সপ্তাহ পর।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply