কিশোরীকে বাল্যবিবাহে রাজি হতে চাপ দিয়েছিল সেই এসআই আকবর

|

বন্দরবাজার ফাঁড়ির বরখাস্ত ইনচার্জ ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) বন্দরবাজার ফাঁড়ির বরখাস্ত ইনচার্জ ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেনের বিরুদ্ধে এবার উঠেছে নতুন অভিযোগ।

সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে এক কিশোরীকে বাল্যবিবাহ দিতে চাপ দিয়েছিলেন এসআই আকবর। তার এই অন্যায় হস্তক্ষেপ থেকে রক্ষা পেতে ওই কিশোরী আশুগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।

জানা যায়, মোমিনা বেগম নামে ওই কিশোরী ২০১৯ সালে ৫ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী অফিসার অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে বলা হয়, স্থানীয় বেড়তলা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী মোমিনা। মেধাবী এই শিক্ষার্থীর পিতা নুরুল আমীনকে খড়িয়ালা গ্রামের দুস্কৃতিরা তার চার বছর আগে হত্যা করে।

পিতৃহীন মোমিনা বেগমকে চাচাতো ভাই উছমান ভূঁইয়া কাছে বাল্যবিবাহ দিতে তার পরিবারকে চাপ দেয় এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ তার অন্য সহযোগীরা। এসময় তার মা ও তার পরিবারকে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া ভয়ভীতিও দেখায়। বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেতে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরারর অভিযোগ করেন।

পরবর্তীতে আশুগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিমুল হায়দার এসআই আকবরের চাচাতো ভাই উছমান ভূঁইয়াকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন। যার ফলে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পায় মোমিনা। এখন সে নিয়মিত লেখাপড়া করছে।

শিক্ষার্থী মোমিনা বেগমের ভাই সালমান আমিন জানান, ইউএনও স্যারের জন্য সেদিন আমার বোন বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পায়। এসআই আকবরও তার সহযোগীরা অন্যায়ভাবে আমার মা ও পরিবারকে বাল্যবিবাহ দিতে চাপ দিয়েছিল।

মোমিনা বেগম ও তার মা সাথে যোগাযোগ করলে তারা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়ার সহযোগীদের ভয়ে এখন কথা বলতে আগ্রহী না। তবে তার উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিমুল হায়দারের প্রতি কৃতজ্ঞ।

তবে পুলিশ কর্মকর্তা আকবরের ছোট ভাই আরিফ ভূঁইয়া বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আমার ভাই এই ধরণের কাজ কখনোই করতে পারে না। এগুলো অভিযোগ সঠিক না। বগইর গ্রামে সকল সমাজিক কাজে আমার ভাই এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়ার অংশগ্রহণ ছিল, তা সবার জানা আছে।

উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) বন্দরবাজার পুলিশ
ফাঁড়িতে পুলিশ হেফাজতে রায়হান উদ্দিন নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। তিনি সিলেট নগরের আখালিয়া নেহারিপাড়া এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, রায়হানকে ধরে এনে টাকার জন্য নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) উপ-পরিদর্শক আকবর ভূঁইয়া সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর থেকেই পলাতক রয়েছেন এসআই আকবর।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply