হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করলেন রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকৌশলী

|

স্টাফ রিপোর্টার, নাটোর:

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় হেলিকপ্টার নিয়ে বিয়ে করে ছোটবেলার স্বপ্ন পূরণ করলেন রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকৌশলী হারুন অর রশীদ বাদশা। শনিবার উপজেলার সোনাপুর পাবনাপাড়া গ্রাম থেকে গিয়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় বিয়ে করেন তিনি।

বর প্রকৌশলী হারুন অর রশীদ পাবনাপাড়া গ্রামের শিক্ষক মাওলানা নূরুল ইসলামের ছেলে এবং কনে গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়িহাট গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট নূহুন নবীর মেয়ে প্রকৌশলী উর্মী আক্তার এনি।

শনিবার দুপুর ১২টায় উপজেলার সোনাপুর মাঠে যখন হেলিকপ্টার এসে নামে তখন পুরো গ্রামে এক অন্যরকম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এক লাখ পঞ্চান্ন হাজার টাকায় ভাড়া করা হেলিকপ্টারে চেপে রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার রাজাবাড়ি হাট গ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন বাদশা। বিয়ে বাড়িতে হেলিকপ্টারে পৌঁছাতে সময় নেয় ২০ মিনিট।

বর ও কনে দুজনেই বাগাতিপাড়া উপজেলার বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভারসিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (বাউয়েট) এ পড়ালেখা করতেন। সেখানেই পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে ঠিকঠাক হয়। বাদশা বর্তমানে পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তড়িৎ প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত আছেন। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বিকেল সাড়ে তিনটায় পাবনা পাড়ায় ফিরে আসে হেলিকপ্টারটি। এলাকার তরুণ তরুণীরা তখন বর কনের সাথে সেলফি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

এ সময় কথা হয় বরের বাবা শিক্ষক নূরুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, ছোটবেলায় আকাশে বিমান উড়তে দেখে তার ছেলের শখ হয়েছিল হেলিকপ্টারে চড়ার। পরে মজার ছলে বলেছিলাম, বাব তোমাকে হেলিকপ্টারে করেই বিয়ে দেবো। এ সময় ছেলেও স্বপ্ন দেখতে শুরু করলো। ছেলের স্বপ্ন পূরণ করতেই এমন আয়োজন করেছেন বলে জানান তিনি।

বরের ভাগনি হেলিকপ্টারযাত্রী আফছানা খাতুন জানান, হেলিকপ্টারে চড়ে মামার সাথে বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে ব্যতিক্রম অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।

বরযাত্রী দয়ারামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুর ইসলাম মিঠু বলেন, হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ের ঘটনা তার এলাকায় এটিই প্রথম। তার জানামতে এর আগে বাগাতিপাড়া উপজেলায় এমন বিয়ের ঘটনা ঘটেনি। এলাকাবাসীর মধ্যে এই বিয়ে নিয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বাস উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।

বর প্রকৌশলী হারুন অর রশীদ বাদশা বলেন, আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে যাওয়ার। বাবার চেষ্টায় সেই স্বপ্ন আজ পূরণ হলো। দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মুচকি হেসে তিনি বলেন, তাদের বিয়ে পারিবারিকভাবেই হচ্ছে।

কনে উর্মী আক্তার এনির প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা না বলে শুধুই লাজুক চাহনিতে তাকিয়ে মিষ্টি করে হেসেছেন।

বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আবু সাদাত বলেন, থানায় অবহিত করে বিয়ের আয়োজন করায় হেলিকপ্টারসহ লোকজনের নিরাপত্তায় বিয়ে বাড়িতে পুলিশ দায়িত্ব পালন করেছেন।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply