করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এলে, তৈরি পোশাক শিল্পে আবারও প্রণোদনার ঘোষণা আসতে পারে: বাণিজ্যমন্ত্রী

|

করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ এলে, তৈরি পোশাক শিল্পের প্রয়োজনে আবারও সরকারি প্রণোদনার ঘোষণা আসতে পারে। বিষয়টি নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা চলছে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

রোববার পোশাক শিল্প ও শ্রমিকদের উন্নয়নে বিজিএমইএ ঘোষিত সাত দফা প্রতিশ্রুতির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমনটা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে এই বাণিজ্যে সাহায্য সহযোগিতা যেভাবে দেওয়া হয়েছিল, সেটা পুনর্বিবেচনা করতে হতে পারে। হয়ত সাহায্য সহযোগিতা বাড়াতে হবে। তাদের সময় বাড়িয়ে দিতে হতে পারে। সময় বাড়িয়ে দিলে হয়ত তারা সামনের বিপদটা থেকে বেরিয়ে আসতে চেষ্টা করতে পারেন।

বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, আরেকটি প্রণোদনা না পেলে এই রপ্তানি খাতের জন্য টিকে থাকা কঠিন হবে।

বিজিএমইএর উদ্যোগ প্রসঙ্গে টিপু মুনশি বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে। এতে কিছু মানুষ হয়ত চাকরি হারাবে। কিন্তু আধুনিক শিক্ষা ও নতুন চিন্তা কাঠামোর মধ্যে আনার চেষ্টা করতে হবে। বিশ্ববাজারেও আমাদের জনবলের প্রয়োজন রয়েছে।

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বিজিএমইএর সাত দফা প্রতিশ্রুতির নানা দিক তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি রুবানা হক। পোশাক শিল্পের কর্মীদের সহায়তা করা, তাদের পাশে থাকা এবং সে সঙ্গে আর্থ-সামাজিকভাবে একটি উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলাই এই সাত প্রতিশ্রুতির মূল লক্ষ্য।

প্রথম দফায় শ্রমিকদের জন্য উচ্চতর শিক্ষার প্রতিশ্রুতিতে তিনি বলেন, শ্রমিক ভাইবোনদের জন্য উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছি আমরা। বর্তমানে ৭০ নারীকর্মী সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে বিশেষ কোর্স করছেন। এই বছর তাদের মধ্য থেকে চারজন স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করবেন। শিল্পের ভেতরে ও বাইরে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন।

শ্রমিকের সন্তানদের প্রাক-শৈশব শিক্ষার ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়ে রুবানা বলেন, এই শিশুদের অনলাইনে শিক্ষা দেওয়ার জন্য বিজিএমইএ ও জাগো ফাউন্ডেশন উদ্যোগ নিয়েছে। একটি পাইলটও হয়ে গেছে। আগামীতে এই কর্মসূচি বড় পরিসরে শুরু হবে।

তৃতীয় দফায় মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, বিজিএমইএর পক্ষ থেকে প্রথমবারের পোশাক শিল্পখাতের শ্রমিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে ব্যতিক্রমী একটি উদ্যোগ নিয়েছি। ‘মনের বন্ধু’ নামক প্রতিষ্ঠান আমাদের সঙ্গে কাজ করছে। এই পর্যন্ত ৫০টি কারখানায় মনের বন্ধু সেশনগুলো পরিচালনা করেছে।

চতুর্থ প্রতিশ্রুতি প্রসঙ্গে রুবানা বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে পোশাক কারখানাগুলোর ভূমিকা নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রতিবেদন তৈরি হয়নি। সে প্রতিবেদন তৈরির জন্য আমরা ইউএনডিপি ও জিআরআইয়ের উদ্যোগে ‘সাসটেইনিবিলিটি রিপোর্টিং স্টাডি’ নামে কার্যক্রম ৫০ কারখানায় পরিচালনা করছি।

শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা বড় পরিসরে কাজ করার প্রতিশ্রুতিও এ সময় দেন বিজিএমইএ সভাপতি। পোশাক শিল্পের দক্ষতা ও উদ্ভাবনী সক্ষমতার বিকাশে কাজ করার প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, উৎপাদনশীলতা, উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ এবং পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি কেন্দ্র খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply