ঝালকাঠি আদালতে প্রক্সি সাক্ষী আটক

|

মোহরার মো. মামুনুর রশিদ ওরফে (হারুন)।

ঝালকাঠি প্রতিনিধি:

ঝালকাঠি আদালতে ভাইয়ের পরিবর্তে ভাই সাক্ষ্য দেওয়ার অপরাধে সাক্ষীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনজীবী সহকারীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বর্তমানে সে পলাতক রয়েছে।

আদালতে শপথ পাঠ করে ভাইয়ের পরিবর্তে ভাই প্রক্সি সাক্ষ্য দেওয়ার অপরাধে ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিশিয়াল জজ আদালতের বিচারক সারাহ ফারজানা হক বাদি হয়ে সাক্ষীর ও উক্ত মামলার মোহরার বিরুদ্ধে দায়ের করেন। রোববার দুপুর দেড়টায় রাজাপুর সিনিয়র আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

সেদিন স্বত্বের ঘোষণার মামলার শুনানির দিন ধার্য থাকায় বাদি মিজানুর রহমান আজাদের সাক্ষ্য প্রধানের তারিখ ছিল। আজাদ উপস্থিত না থাকায় তার পরিবর্তে ভাই মাসুদ শিকদার মোহরার হারুনের পরামর্শে আদালতে সাক্ষ্য দিতে দাঁড়ায়।

বিবাদি মো. এছাহাক আলীর পক্ষের কৌসুলি মো. বাহাউদ্দিন ওলি আদালতকে জানান, সাক্ষীর ডকে দাঁড়ানো ব্যক্তি আসল সাক্ষী নন। তিনি মামলার বাদি নন। এই হলো বাদির ভাই মাসুদ সিকদার। তিনি স্বীকার করেন মামলার বাদি মিজানুর রহমান আজাদ নন। এই মর্মে তিনি আদালতে জবানবন্দি প্রদান করলে আদালত তার জবানবন্দী রেকর্ড করেন।

রাজাপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল জজ, সারাহ ফারজানা হক প্রক্সি দিতে আসা মাসুদ সিকদারের কাছে জানতে চাইলে বিচারককে জানান, তার আইনজীবীর মোহরার মো. মামুনুর রশিদ ওরফে (হারুন) এই মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

পরবর্তীতে আদালতের পুলিশের মাধ্যমে মাসুদ শিকদারকে আটক করা হয়। মাসুদ শিকদার ও মোহরার মামুনুর রসিদ হারুনকে দণ্ডবিধির ৪১৯/৪৬৮/৪৭১/৪৬৫/৩৪ ধারার অধীন অপরাধ করেছেন বলে বিবেচিত হয়।

উল্লেখ্য, ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বড় কৈবর্ত খালী গ্রামের মৃত আমজেদ খানের ছেলে মো. মামুনুর রশিদ ওরফে (হারুন) আইনজীবীর সহকারী হয়ে এলাকার নিরীহ মানুষের উপর মামলার নির্যাতন চালানোর অভিযোগ রয়েছে।

স্বামী-স্ত্রী ঝগড়ায় স্ত্রীর পক্ষ হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করে সংসার ভাঙ্গা, ও জমি জমা নিয়ে বিভিন্ন মানুষের উপর মামলা দেয়ার এলাকাবাসীর অভিযোগ। শুধু তাই নয়, তার কাছে অনেক নারীরা নাকের নাক ফুল, আংটি, স্বর্ণের বালাসহ বিভিন্ন জিনিসের বন্ধক রেখে তার মামলা চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে অনেকের ভিটে মাটি ছাড়াও করেছে এই হারুন হুজুর।

আইনজীবী মো. বাহাউদ্দিন হাসান ওলি বলেন, আমি বিবাদি পক্ষের আইনজীবী হিসাবে ছিলাম। ঐদিন মালার বাদির সাক্ষ্য গ্রহণের শুনানির দিন ধার্য ছিল কিন্তু ১নং সাক্ষী মো. মিজানুর রহমান আজাদের পরিবর্তে তার ভাই সাক্ষী দেওয়ার ঘটনা আমি আদালতে অবহিত করলে আমার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রাজাপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল জজ, সারাহ ফারজানা হক বাদি হয়ে দুইজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং সিআর ৩৪৬/২০২০(ঝালকাঠি সদর)।

আসামিরা হলো- (১) মাসুদ শিকদার, পিতা.মৃত জলিল শিকদার,সাং নিজ গালুয়া পো. কৈবর্তখালী ও (২) মো.মামুনুর রসিদ (হারুন) পিতা. মৃত আমজেদ আলী শিকদার মোহরার কার্ড নং ১৫৭ জেলা আইনজীবী সমিতি, গ্রাম বড় কৈবর্তখালী উভয় থানা ও জেলা ঝালকাঠি।

২নং আসামি মোহরার হারুন পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়েছে। এই মামলায় আইনজীবীসহ ৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। আদালত ঘটনাটি আমলে নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply