বুলডোজার ঠেকালেন বিশিষ্টজনরা; চট্টগ্রামে রক্ষা পেলো ঐতিহাসিক বাড়ি

|

চট্টগ্রামে বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত রহমতগঞ্জ এলাকার ঐতিহাসিক যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্তের বাড়িটি রক্ষায় মাঠে নেমেছেন সর্বস্তরের মানুষ। বাড়িটি ভেঙে ফেলার চেষ্টার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত হয়েছে মানববন্ধন-সমাবেশ। সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিশিষ্টজনরা। জাল দলিলে ঐতিহাসিক স্থাপনা দখলের চেষ্টায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। এটিকে ‘ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন স্মৃতি জাদুঘর’ করার দাবি তাদের।

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। নগরীর রহমতগঞ্জে আড়াইশো বছরের পুরনো ঐতিহাসিক এ স্থাপনাটি বুলডোজার দিয়ে হঠাৎ ভাঙা শুরু করলে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাধা দেন রাজনীতিবিদ, কবি, সাহিত্যিক, আইনজীবী, ইতিহাসবিদ, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

তাদের দাবি, এটি বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেন এবং তার বাবা যাত্রা মোহন সেনের বাড়ি। মহাত্মা গান্ধী, মৌলানা শওকত আলী, নেতাজি সুভাষ বসু, দেশবন্ধূ চিত্তরঞ্জন দাশসহ আরো অনেকের স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটি বর্তমানে অর্পিত সম্পত্তি হিসাবে জেলা প্রশাসনের অধীনে। কিন্তু ফরিদ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি ক্রয়সূত্রে মামলা করে আদালতের রায় নিয়ে বাড়িটি দখলে নিতে ভাঙা শুরু করেন।

মঙ্গলবার সকালে ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে বিশিষ্টজনরা জাল দলিল সৃজন করে ঐতিহাসিক এ স্থাপনা ভাঙার অপচেষ্টা বন্ধ করে বিপ্লবীদের স্মৃতি সংরক্ষণে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দেন তারা।

মানবাধিকার অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত এই বাড়িটি কীভাবে ভাঙা হল? কারা এটি ভাঙল? এই বুলডোজার কার? চট্টগ্রামে জে এম সেনের ঐতিহাসিক বাড়ি রক্ষায় প্রয়োজনে আদালতে মামলা হবে। যারা ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে লড়াই করেছে সেখানে একটি জাদুঘর স্থাপন করা হোক।

একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, এটা ঐতিহাসিক সম্পদ, সাংস্কৃতিক সম্পদ। আমরা আদালত ভবন রক্ষা করার সময় মামলা করেছিলাম। এখানেও প্রয়োজন হলে আমরা মামলা করবো।

একই দাবিতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিভিন্ন সংগঠন। তারা ঐতিহাসিক এই জমি দখলে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন।

এদিকে, ক্রয়সূত্রে এবং আদালতের রায় অনুসারে বাড়িটির দখল বুঝে নিতে গিয়েছিলেন বলে দাবি অপরপক্ষের।

মালিকানা দাবিদার ফরিদ উদ্দিনের ছেলে ফরহাদ বলেন, যারা মূল মালিক তারা জমি বিক্রি করে চলে গেছে। তাদের আর কোনো স্বত্ব নেই। জজ আমাদের জারির অর্ডার দিয়েছেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply