চলন্ত ট্রেন থেকে মা ছিটকে পড়লেন, শিশু সন্তান রয়ে গেল ট্রেনেই

|

ভৈরব প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম-ঢাকাগামী আন্তঃনগর মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রা বিরতি দেয় রাত পৌনে নয়টায়। ছয় বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে ভৈরব রেল স্টেশন থেকে ট্রেনের যাত্রী হয় এক নারী। চার মিনিট পর ট্রেনটি স্টেশন ছেড়ে যায়। সন্তান নিয়ে ভিড় ঠেলে তখনও ওই নারী কামড়ার ভেতরে পৌঁছাতে পারেনি। তাঁর হাতে ছিল একটি ব্যাগ। প্ল্যাটফরম থেকে ট্রেনটি ১০০ গজ সামনে যেতেই ব্যাগটি ধরে এক ছিনতাইকারী দেয় টান। এসময় চলন্ত ট্রেন থেকে নারী ছিটকে লাইনের পাশে পড়ে যায়। মা ছিটকে পড়লেও শিশুটি ট্রেনের ভেতরেই ছিল বলে জানায় যাত্রীরা।

এসময় মুমূর্ষু অবস্থায় নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। আর শিশুটি বিমানবন্দর রেলওয়ে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত নারীর বয়স ৪৫ থেকে ৫০ বছর হতে পারে।

বিমানবন্দর পুলিশকে শিশুটি জানিয়েছে তার নাম মেরাজ। বাবা মিলন মিয়া। বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার চান্দুপুর গ্রামে। নিজের ও বাবার নাম বলতে পারলেও শিশুটি মায়ের নাম বলতে পারেনি।

ভৈরবের হানিফ নামের এক তরুণ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন। তিনি ট্রেনটির যাত্রী ছিলেন বলে জানান। হানিফ বলেন, ট্রেনটি তখন ধীর গতিতেই চলছিল। একজন ছিনতাইকারী ব্যাগটি ধরে টান দিতেই ওই নারী ট্রেন থেকে ছিটকে নিচে পড়ে যায়। পরে আমরা শিশুটিকে সঙ্গে রাখি এবং ঘটনাটি ভৈরবের কয়েকজন জানিয়ে ছিটকে পড়া নারীকে সহযোগিতার অনুরোধ জানায়।

রেললাইনের পাশে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় কয়েকজন আহত নারীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পর্যন্ত নিয়ে আসেন। তাঁদের মধ্যে শহীদুল আলম সুমন একজন। শহীদুল আলম জানান, লাইন থেকে অন্তত দুই গজ দূরে পড়ে ছিল ওই নারী । তখন জ্ঞান ছিল না। পরে তাঁরা হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর চিকিৎসা দেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল নোমান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। ভেতরে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল এবং বমিও করেছে। সব মিলিয়ে আহত নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি শিশুটি এখন বিমানবন্দর পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। আহত নারীর নামটি এখনও জানা যায়নি। পুলিশ ছিনতাইকারীকে ধরতে মাঠে নেমেছে বলে জানান তিনি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply