নিহত ১৭ জনের ১২ জনের লাশই পুড়ে ছাই!

|

রাজশাহীতে বাস-মাইক্রোবাস-লেগুনার ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১৭

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট:

রাজশাহীর কাটাখালিতে যাত্রীবাহী বাস-মাইক্রো ও লেগুনার ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১৮ জনের গ্রামের বাড়িই রংপুরের পীরগঞ্জের তিনগ্রামে। এরা চার পরিবারের স্বামী স্ত্রী, পুত্র কন্যা এবং নিকটাত্মীয়। ওই তিনটি গ্রাম এখন ভাসছে আহাজারির নোনা পানিতে।

পীরগঞ্জ থানার ওসি সরেস চন্দ্র জানান, শুক্রবার সকালে পীরগঞ্জ থেকে হাইএক্স মাইক্রোবাসে করে রাজশাহীতে পিকনিকের জন্য যাচ্ছিলেন। নিহতের মধ্যে ৪টি পরিবারের ১৬ জন সদস্য ছাড়াও ২ জন রয়েছেন।

ওসি জানান নিহতরা হলেন, পীরগঞ্জ উপজেলার দারিকাপাড়া গ্রামের মোখলেছার রহমান, তার স্ত্রী পারভীন বেগম ও পুত্র পাভেল।

নিহত অন্যান্যরা হলেন প্রজাপাড়ার তাজুল ইসলাম ভুট্টু, তার স্ত্রী মুক্তা বেগম ও পুত্র ইয়ামিন। বড় মজিদপুর গ্রামের ফুল মিয়া, তার স্ত্রী নাজমা বেগম দুই মেয়ে সুমাইয়া (৭) ও সাজিদা (৩)। রাজারামপুর গ্রামের সালাহ উদ্দিন, তার স্ত্রী শামসুন্নাহার বেগম, পুত্র সজিব, মেয়ে সাবা ও শ্যালিকা কামরুন্নাহার বেগম।

দুরাকুঠি গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও মাইক্রোবাসের ড্রাইভার পচা মিয়াও মারা যান এই দুর্ঘটনায়। এর মধ্যে ১২ জনের লাশ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তাদের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে।

ওসি জানান, কয়েকদিন আগে পীরগঞ্জের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ১৪ সিটের একটি হাইএক্স মাইক্রোবাস ক্রয় করেন। শুক্রবার সকালে ৪টি পরিবারের সদস্যসহ ১৭ জন ওই মাইক্রোবাস ভাড়া করে রাজশাহীর পদ্মার পাড়ে পিকনিকের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। কাটাখালি কাপাশিয়া এলাকায় পৌঁছার পর বিপরীত দিক থেকে আসা হানিফ যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায় এতে ঘটনাস্থলেই ১৮ জনই নিহত হয়।

ওসি আরও জানান, রাজশাহী থেকে তাকে ওয়ারলেস ম্যাসেজ করে দুর্ঘটনার খবর জানানো হয়। নিহতদের স্বজনরা দু’টি গাড়িতে করে ঘটনা স্থলে গেছে। রাত আটটায় তারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছেছেন। তবে লাশ কখন হস্তান্তর করা হবে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করা হয়নি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যেহেতু ১২টি লাশ পুড়ে গেছে। তাদেরকে ডিএনএ পরীক্ষা করার পরেই পরিচয় শনাক্ত করা হবে। এছাড়াও যারা পরিবারের লোকজন গেছেন বাকি পাঁচটি তাদের মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে। পুরো প্রক্রিয়াটি করতে আগামীকাল দুপুর পর্যন্ত লেগে যেতে পারে বলে জানা গেছে।

এদিকে নিহতে বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে কেউ নেই। আশেপাশ থেকে শতশত মানুষ ভিড় করেছেন বাড়িগুলোতে। সবার চোখে শুধুই পানি আর পানি। এই পানি মুছে দেয়ার যেন কেউ নেই গ্রামে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply