হামলার প্রতিবাদে যা বললেন মির্জা ফখরুল!

|

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি।

চলমান অস্থিরতা ও সহিংসতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বিবৃতিতে ফখরুল বলেন, ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সাধারণ মুসুল্লীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণ ও বেধড়ক লাঠিচার্জের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার সাধারণ ছাত্ররা তাৎক্ষণিকভাবে মিছিল বের করলে পুলিশ শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপর বেপরোয়া গুলি চালিয়ে এপর্যন্ত চারজনকে হত্যা ও অসংখ্য ছাত্রকে গুরুতর আহত করে।

এর প্রতিবাদে সন্ধ্যায় ব্র্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিবাদরত মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ১ জনকে হত্যা ও অসংখ্য মানুষকে আহত করা হয়। এ ধরনের নির্মম, ন্যাক্কারজনক ও অমানবিক ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “মহান স্বাধীনতা দিবসের মতো জাতীয় উৎসবের দিনে ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, চট্টগ্রামের হাটহাজারী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের যৌথ হামলা এবং হত্যার ঘটনা বর্তমান সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণের আরও একটি জঘন্য দৃষ্টান্ত। হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারের সন্ত্রাসী বাহিনীর নির্মম হামলায় এপর্যন্ত পাঁচ জনের প্রাণহানি, অসংখ্য গুরুতর আহত এবং বায়তুল মোকাররমে পুলিশের পৈশাচিক হামলায় সাধারণ মুসুল্লিরা গুরুতর আহত হয়েছে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা দিবসের মতো উৎসব ও আনন্দের দিনে যেখানে রাজপথে ফুল ছিটানোর কথা, সেখানে রাজপথে রক্ত ঝরানো হল। এই নির্মম ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। স্বাধীন দেশে যেকোনো কর্মসূচি পালন করার বা যেকোনো বিষয়ে স্বাধীন মতামত ব্যক্ত করার অধিকার সকল নাগরিকের আছে। কিন্তু স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মুহূর্তে বলতে হচ্ছে স্বাধীন দেশে জনগণ আজ যেন পরাধীন। জনগণের সকল গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিয়ে সরকার দেশে নিষ্ঠুর কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করেছে।

তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা রক্তের নিষ্ঠুর হোলিখেলা চলছে। বিরোধী দল এবং বিরুদ্ধ মতের সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত ও অমানুষিক নির্যাতন এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আওয়ামী সরকার যেন জনগণের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ চালাচ্ছে। আওয়ামী অবৈধ সরকারের গত ১২ বছরের নিষ্ঠুর শাসনে প্রতিদিন-প্রতিনিয়ত বিরোধী নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত অবস্থায় দিনাতিপাত করছে।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রীয় ও দলীয় ভয়াবহ সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশের মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত রেখে রাষ্ট্রক্ষমতা ধরে রাখতে দেশ যেন এখন গুম, খুন, অপহরণ ও নির্যাতন-নিপীড়নের ভয়াল উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই আওয়ামী সরকার জনগণকে তোয়াক্কা করে না, জনগণের ভালমন্দ বিচার কিংবা জনগণের আবেগ-অনুভূতিকে গুরুত্ব দেয় না। আওয়ামী বর্বর সরকার তাদের নিজের হাত রক্তে ভেজাতে দ্বিধা করে না। আজ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারের নির্দেশে পুলিশ ও সরকারদলীয় সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসীদের দ্বারা নির্দয়, অমানবিক ও কাপুরুষোচিত হামলা, গুলিবর্ষণ করে পাঁচজন নিরীহ মানুষকে হত্যা ও অসংখ্য মানুষকে গুরুতর আহত করার ঘটনায় ধিক্কার জানাই। এসব অপকর্মের জবাব দেয়ার জন্য আওয়ামী ভোটারবিহীন সরকারকে অবশ্যই একদিন জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। জনগণ এই বর্বর আচরণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।

সবশেষে তিনি জানান, আমি গুলিতে নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply