প্রিন্স ফিলিপের ইতিবৃত্ত

|

শতবর্ষ ছুঁয়ে দেখার আগ মুহূর্তেই পৃথিবীকে বিদায় জানালেন ডিউক অব এডিনবরা প্রিন্স ফিলিপ। ৯৯ বছর বয়সে মারা গেলেন তিনি। আর ৭৩ বছরের দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে।

ডিউক অব এডিনবরার জন্ম গ্রিসের রাজ পরিবারে ১৯২১ সালের ১০ জুন। ফিলিপের পিতা ছিলেন গ্রিসের প্রিন্স অ্যান্ড্রু আর মা ব্যাটেনবার্গের প্রিন্সেস অ্যালিস। বাবা মায়ের সন্তানদের মধ্যে তিনিই ছিলেন একমাত্র ছেলে। খুবই আদরে কেটেছে তার শিশুকাল।

ফিলিপের জন্মের এক বছর পর ১৯২২ সালে এক অভ্যুত্থানের পর বিপ্লবী এক আদালতের রায়ে প্রিন্স ফিলিপের পিতার পরিবারকে গ্রিসের ওই দ্বীপ থেকে নির্বাসনে পাঠানো হয়। তার কাজিন রাজা পঞ্চম জর্জ তাদের উদ্ধার করে আনতে একটি ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ পাঠান, যে জাহাজে করে সেখান থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় ফ্রান্সে।

ফ্রান্সেই শুরু হয় তার লেখাপড়া। সাত বছর বয়সে তিনি ইংল্যান্ডে মাউন্টব্যাটেন পরিবারে তার আত্মীয়স্বজনদের কাছে চলে আসেন এবং এরপর তার স্কুল জীবন কাটে ইংল্যান্ডে। এসময় তার মা মানসিক রোগে আক্রান্ত হলে তাকে মানসিক রোগের হাসপাতালে রাখা হয়, এবং তখন কিশোর ফিলিপকে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হতো না।

ফিলিপ লেখাপড়া শেষ করেন জার্মানি ও স্কটল্যান্ডে। স্কটিশ একটি বোর্ডিং স্কুল গর্ডনস্টোনে তিনি লেখাপড়া করেন। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় তিনি চাকরি নেন রয়্যাল নেভিতে। ১৯৩৯ সালে প্রিন্স ফিলিপ যখন ডার্টমাথে ব্রিটানিয়া রয়্যাল নেভাল কলেজের ক্যাডেট, তখন ওই কলেজ পরিদর্শন করেন রাজা ষষ্ঠ জর্জ এবং রানী এলিজাবেথ। তাদের সঙ্গে ছিলেন দুই কিশোরী কন্যা- প্রিন্সেস এলিজাবেথ ও প্রিন্সেস মার্গারেট। ওই সফরে দুই কিশোরী প্রিন্সেসের সঙ্গী হয়ে তাদের সঙ্গ দেন প্রিন্স ফিলিপ। ওই সময়ে প্রিন্সেস এলিজাবেথের বয়স ছিল ১৩ বছর।

১৯৪২ সালের ওই সময়েই প্রিন্স ফিলিপ হয়ে ওঠেন রয়্যাল নেভির তরুণতম ফার্স্ট লেফটেন্যান্ট। এই সময় তারা দু’জন প্রচুর চিঠি চালাচালি করেছেন। বেশ কয়েকবার রাজপরিবারের সঙ্গে থাকার আমন্ত্রণও পেয়েছেন তিনি।

এরকমই একটি সফরের পর ১৯৪৩ সালের বড়দিনের সময় এলিজাবেথ তার প্রসাধনের টেবিলে প্রিন্সের একটি ছবি সাজিয়ে রাখেন। তাদের সম্পর্ক গভীর হয়ে ওঠে যুদ্ধ পরবর্তী দিনগুলোতে।

১৯৪৬ সালে ফিলিপ রাজার কাছে গিয়ে তার কন্যাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। বিয়ের আগে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব নিতে হয় ফিলিপকে। গ্রিক পদবি বাদ দিয়ে তিনি নেন মায়ের ইংরেজ পদবি মাউন্টব্যাটেন।

মেয়ের সাথে বিয়ের অনুষ্ঠানের আগের দিন রাজা ষষ্ঠ জর্জ তাকে ‘হিজ রয়্যাল হাইনেস’ উপাধি দেন। আর বিয়ের দিন সকালে তাকে করা হয় ‘ডিউক অফ এডিনবরা।’ ওয়েস্টমিনস্টার গির্জায় ১৯৪৭ সালের ২০ নভেম্বর তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply