পটুয়াখালীতে চাল আত্মসাতের ঘটনা সাজানো, দাবি ১১ ইউপি চেয়ারম্যানের

|

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীতে সরকারি চাল আত্মসাতের ঘটনায় কারাগারে থাকা ইউপি চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন হাওলাদারের মুক্তি ও তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সদর উপজেলার ১১ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ সদর উপজেলা পরিষদ। এসময় আলতাফ হোসেনের স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরাও সাথে ছিলেন। তাদের দাবি, একটি প্রভাবশালী মহল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এবং আগামী ইউপি নির্বাচনে আলতাফ হোসেনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করতে দেয়ার জন্যই সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে একটি নাটক সাজিয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় পটুয়াখালী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়। লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, ছোট বিঘাই ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দকৃত সাতশ বিশ বস্তা (ছত্রিশ মেট্রিক টন) চাল ছাড়পত্র করিয়ে ট্রলার ভর্তির নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান ও সচিব। দুর্ভাগ্যবশত ১৩ তারিখ সকালে সব বস্তা ট্রলারে ভর্তি করা সম্ভব না হওয়ায় ১৩ বস্তা চাল সরকারি খাদ্য গুদামে রেখে যায় ট্রলার মালিক। ওইদিন দুপুরে জেলেদের মধ্যে সেই চাল বিতরণের সময় স্থানীয় বাচ্চু ও আসলাম মেম্বার গং চাল কম আছে বলে বিতরণে বাধা দিয়ে জেলা প্রশাসনকে অবহিত করেন।

পরে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তা, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে সবার কথাবার্তা শোনেন এবং সেখানে ১৩ বস্তা চাল কম দেখতে পান। ওই ১৩ বস্তা চাল ট্রলারে স্থান সংকুলান না হবার বিষয়টি তখন উপস্থিত সকল কর্মকর্তাদের বুঝিয়ে বলেন চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন। তার কথা শুনে সেই ১৩ বস্তা চাল এনে জেলেদের মধ্যে বিতরণের জন্য তাগিদ দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন সেই কর্মকর্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর অন্য ট্রলারে করে সেই ১৩ বস্তা চালও সেখানে পৌঁছে যায়। পরে ওইদিন বিকেল ৫ টার মধ্যে সকল জেলেদের মধ্যে ছত্রিশ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করে মাস্টার রোলে ট্যাগ অফিসার ও মেম্বারদের স্বাক্ষর নেয়া হয়। এরপরও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেনের নামে মামলা দেয়া হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে ফিরে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে পটুয়াখালী সদর থানায় চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন হাওলাদারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। তিনদিনের মাথায় গত ১৬ মে স্থানীয় বসাক বাজার এলাকা থেকে আলতাফ হোসেনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। যে কর্মকর্তা জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণের মাস্টাররোলে স্বাক্ষর দিয়েছেন তাকেই আবার চাল আত্মসাতের মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে, উপজেলার ১১ জন ইউপি চেয়ারম্যানসহ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার, ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ সোহেল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহানা হোসেন মিকি এবং চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন হাওলাদারের স্ত্রী শিবলীর নাহার সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সুভাস চন্দ্র হাওলাদারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মাস্টাররোলে চাল বিতরণের পর স্বাক্ষর দেয়ার কথা জানান। তবে মামলায় সাক্ষী করার বিষয়টি তার জানা নেই।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply