স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, নারায়ণগঞ্জ :
জাতীয় হটলাইন ৩৩৩ নম্বরে ফোন দিয়ে খাদ্য সহায়তা চেয়ে হয়রানি করার অভিযোগে শাস্তি হিসেবে ১০০ গরীব পরিবারকে খাদ্য সহায়তা করতে বিপাকে পড়েছেন ফরিদ আহমেদ। উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার বেধে দেয়া ১০০ প্যাকেট খাদ্য সহায়তা না করলে তিন মাসের জেল হবে এই ভয়ে চড়া সুদে ঋণ করে ও সোনাগয়না বন্ধক রেখে টাকা জোগার করে খাদ্য সামগ্রী ক্রয় করেন।
শনিবার বিকেলে সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের দেওভোগ এলাকায় ফরিদ আহমেদের বাড়ির সামনে গিয়ে জরিমানাকৃত খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন ইউএনও আরিফা জহুরা। খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেটের মধ্যে ছিল ৫ কেজি চাল, এক কেজি লবণ, আলু, পেয়াজ, তেল।
ফরিদ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, গত বুধবার আমি এফএম রেডিও’র মাধ্যমে জানতে পেরে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা চাই। এই চার তলা বাড়িটি আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি। আমরা ৬ ভাই এবং এক বোন উত্তরাধিকার সূত্রে এই বাড়ির মালিক। তিনি দাবি করেন, হোসিয়ারি কারখানায় ১২ হাজার টাকা বেতনে কাটিংয়ের কাজ করেন। তার এক ছেলে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এবং তিনি নিজেও স্ট্রোক করেছেন। আমার খাদ্য প্রয়োজন ছিল বলেই ফোন করেছি।
ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী বলেন, ফরিদ আহমেদ ৩৩৩ খাদ্য সহায়তা পাওয়ার উপযুক্ত নন। তাদের চারতলা বাড়িতে তারা সব ভাই-বোন মিলে থাকে। তবে ফরিদ আহমেদের ১০০ প্যাকেট খাদ্য বিতরণ করার আর্থিক সঙ্গতি নেই।
সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরা জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়নি, তাকে সরকারি কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টির দায়ে তার নিজের আশেপাশের ১০০ গরীব পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার অনুরোধ জানালে তিনি তা করতে রাজী হন।
ইউএনও আরও বলেন, এখন ওই ব্যক্তির সর্ম্পকে যেসব বিষয় বা কথাবার্তা আসছে তা খতিয়ে দেখা হবে। তিনি যদি সত্যিই খাদ্য সহায়তা পাওয়ার উপযোগী হন এবং তিনি যদি চান তাকে খাদ্য সহায়তা করা হবে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার জাতীয় হটলাইন নম্বর ৩৩৩ ফোন করে খাদ্য সহায়তা চান সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের দেভোগ নাগবাড়ি এলাকার ফরিদ উদ্দিন। খাদ্য সহায়তা করতে গিয়ে উপজেলা প্রশাসনের লোকজন জানতে পারেন সাহায্য চাওয়া ওই ব্যক্তি চার তলা বাড়ির মালিক এবং তিনি হোসিয়ারি কারখানার মালিক। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা জহুরা অযথা হয়রানি ও সময় নষ্ট করার দায়ে তাকে শাস্তি হিসেবে ১০০ গরীব লোককে খাদ্য সহায়তা করার নির্দেশ দেন।
Leave a reply