উত্তর কোরিয়ায় বিদেশি ভিডিও দেখলে হতে পারে মৃত্যুদণ্ড, এমনকি বিদেশি গালি দিলেও

|

দক্ষিণ কোরিয়ান কে-পপ মডেল। উত্তর কোরিয়ায় এদের মতো করে চুল কাটলেও যেতে হবে হাজতে।

সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া একটি আইন জারি করেছে যেখানে বলা আছে, কেউ যদি বিদেশি ছবি বা পোশাকসহ ধরা পড়ে, এমনকি কেউ যদি বিদেশি গালিও দেয়, তবে তার মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। মূলত উত্তর কোরিয়াকে বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাবমুক্ত রাখার ব্যাপারটিকে প্রাধান্য দিতেই এমন আইন প্রণয়ন করেছে দেশটি।

বিবিসিকে এক ব্যক্তি জানিয়েছে, এই ধরনের একটি অপরাধের জন্য একজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি জানান, তাকে মাত্র ১১ বছর বয়সে গ্রেফতার করা হয়েছিলো, কেননা তার কাছে দক্ষিণ কোরিয়ান নাটকের ভিডিও পাওয়া গেছে। গ্রেফতারের পর ওই ব্যক্তির প্রতিবেশীদের বাধ্য করা হয়েছিলো ঘটনাটা প্রত্যক্ষ করতে।

এই লকডাউনেও উত্তর কোরিয়ায় কোনো ইন্টারনেট নেই, নেই কোনো সামাজিক মাধ্যম, শুধু কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল আছে, যা সরকারের পছন্দমতো বিষয়গুলো প্রচার করে।

এর মধ্যে কিম জং উন এই আইন জারি করেছেন, যেখানে বিদেশি নাটক দেখাকে মনে করা হয় প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তা। কেউ যদি ‌’প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তা’ করায় অভিযুক্ত হয়, অর্থাৎ, তার কাছে যদি জাপানি বা দক্ষিণ কোরিয়ান বা আমেরিকান কোনো ভিডিও থাকে, তবে তাকে ধরে মেরে ফেলা হতে পারে। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট কিম সংবাদমাধ্যমের কাছে একটি চিঠিতে লিখেছেন, তিনি বিদেশি ভাষা, পোশাক এমনকি চুলের স্টাইলকেও বিপজ্জনক বলে মনে করেন।

ডেইলি এনকে নামে সিউলভিত্তিক একটি অনলাইন মাধ্যমের খবরের বরাতে জানা গেছে, উত্তর কোরিয়ায় সম্প্রতি কে-পপ স্টাইলে চুল কাটার অপরাধে তিন কিশোরকে সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, যত দিন যাচ্ছে, ততই আইন এবং শাস্তির মাত্রা কঠোর হচ্ছে। কিম চান তার দেশের নাগরিকরা যেন দেশের বাইরের রাজনৈতিক পরিস্থিতির খবর জানতে না পারে। এজন্যই তার এত আয়োজন। কেউ কেউ বলছেন, মানুষ ক্ষুধায় ব্যস্ত থাকলে তারা স্বৈরাচার নিয়ে কথা বলবে না, তাই উত্তর কোরিয়ার সরকার ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বিমোচনে যতো না আগ্রহী, তার চেয়ে বেশি আগ্রহী মানুষের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply