ডাকাতের ভয়ে চল্লিশ বছর ধরে জনশূন্য বগুড়ার যে গ্রাম

|

ডাকাতের ভয়ে চল্লিশ বছর আগে গ্রাম ছেড়েছিলেন বগুড়ার শাহজাহানপুরের পিচুলগাড়ী গ্রামের লোকজন। এমনকি একজনও থাকেন না ৯ একর আয়তনের এই গ্রামটিতে। গ্রামটির নাম এখন ভূমি সংক্রান্ত দলিল-দস্তাবেজ ছাড়া আর কোথাওই পাওয়া যায় না। কয়েক যুগ জনশূন্য থাকায় গ্রামটিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে অলীক সব গল্পও। নিজের ভূ-সম্পত্তি হলেও, কেউ গাছের পাতা পর্যন্ত ছেঁড়েন না, এমনকি ভয়ে গাছের ফলও খান না অনেকে!

তবে চার দশক ধরে গ্রামে বসতি না থাকলেও, প্রতি শুক্রবার প্রায় দুই কিলোমিটার কাদা-পানির পথ পেরিয়ে অনেকে ঠিকই বাপ-দাদার পুরনো মসজিদে জমায়েত হন প্রবীণ আর তাদের বংশধররা। অনেকেই নিজেদের শেষ ঠিকানাও স্থির করেছেন এখানেই।

গ্রামটির প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, স্বাধীনতার পর থেকেই পিচুলগাড়ীতে চোর-ডাকাতের বেশ উপদ্রব ছিল। আশপাশের জনবসতি না থাকায় আশির দশকের শুরুতে ডাকাতির প্রবণতা আরও বেড়ে যায়। ১৯৮১ সালে লুটপাটের সময় ডাকাতরা খুন করে গ্রামের ধনাঢ্য গৃহস্থ মফিজ উদ্দিন মণ্ডলকে। এরপর থেকেই প্রাণের ভয়ে গ্রাম ছাড়েন বাসিন্দারা।

চারদিকে বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত, মাঝখানে ছোট্ট গ্রাম পিচুলগাড়ী। গ্রামে প্রবেশের কোনো রাস্তা নেই। ক্ষেতের আইল ধরে কয়েক কিলোমিটার হাঁটার পর দেখা মেলে গ্রামটির। চারদিকে ঘন জঙ্গল থাকায় গ্রামের প্রবেশ পথ আন্দাজ করাও বেশ কঠিন।

এখন আর ডাকাতের ভয় নেই এখানে। তবে যোগাযোগের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় স্থায়ীভাবে কেউ বসতি গড়তে পারছেন না পিচুলগাড়ীতে। সেই থেকে জঙ্গলে রূপ নিয়ে আছে তাদের একসময়ের জন্মভিটা। গ্রামবাসী বলছেন, যদি এখানে সড়কের ব্যবস্থা হয়, তাহলে নতুন করে প্রাণ পাবে জনশূন্য এলাকাটি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply