‘হৃদয়বান এই মানুষটিকে ভোলা অসম্ভব’

|

মৃত্যুর ২০ বছর পরও কোটি মানুষের হৃদয়ের রাজকুমারী- ডায়ানা। ব্রিটেনের যুবরাজ চার্লসের সাথে সাড়া জাগানো বিয়ে, চাকচিক্যময় ফ্যাশন, জনকল্যাণমূলক কাজ, প্রণয় আর সবশেষে রহস্যময় মৃত্যু। জীবদ্দশায় সব সময়ই আলোচনায় থেকেছেন ডায়ানা। মৃত্যুর পর গত দুই দশক ধরে নানা সময়ে ‘প্রিন্সেস অব ওয়েলস’কে ঘিরে বেরিয়ে এসেছে নতুন নতুন তথ্য। বর্তমানে তাকে নিয়ে বানানো হচ্ছে তথ্যচিত্র। আবারও আলোচনায় সাবেক এই ব্রিটিশ রাজবধূ।

রাজপ্রাসাদের বাসিন্দা ছিলেন মাত্র ১৬ বছর। এই সময়টুকুতেই সারা বিশ্বের প্রিন্সেস হয়ে উঠেছিলেন ডায়ানা। কেবল নজরকাড়া সৌন্দর্য কিংবা ফ্যাশন নয়, ডায়ানাকে জনপ্রিয় করেছিল তার সাদামাটা জীবন। বিশ্বের সবচেয়ে বনেদি রাজপরিবারের সদস্য হয়েও দাঁড়িয়েছেন দুস্থ, বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে। দাতব্য কাজে ঘুরে বেড়িয়েছেন বিশ্বের নানা প্রান্তে। এই ডায়ানাকে এখনও ভুলতে পারেন না কোটি মানুষ। ২০তম মৃত্যুদিবসেও তাই তার শ্রদ্ধা-ভালোবাসা প্রদর্শনের কমতি নেই।

এক ভক্ত বলছিলেন, ডায়ানার মৃত্যু এখনও মেনে নিতে পারিনা। এমনকি তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানও দেখিনি। তারম তো হৃদয়বান একজন মানুষকে ভোলা অসম্ভব। তিনি বিশ্ব মানবতার প্রতীক; যিনি কোন কুসংস্কারকে পাত্তা দেননি।

রাজবধু হয়েছিলেন মাত্র কুড়ি বছর বয়সে। সেই থেকে যুবরাজ চার্লসের সাথে সংসার, বিতর্ক আর বিচ্ছেদে ঘটনাবহুল জীবন ছিল তার। যা করেছেন তা-ই সংবাদ হয়েছে; যেখানেই গেছেন ক্যামেরার চোখ খুঁজে নিয়েছে তাকে।

রূপকথার মানুষটার হঠাৎ বিদায় মেনে নিতে পারেন না ভক্তরা। আর তার দুই ছেলে কিভাবেই মেনে নেবে তা! মায়ের মৃত্যু স্বাভাবিকভাবেই সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়েছে ছেলে উইলিয়াম ও হ্যারিকে। এবার বেশ আয়োজন করেই মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীর আয়োজন করছেন দুই ভাই। মিডিয়ায় বলেছেন, নিজেদের বেদনার কথা।

যুবরাজ উইলিয়াম বলেন, মাত্র ১৫ বছর বয়সে মা’কে হারানো সবচেয়ে বেদনাদায়ক ঘটনা। মায়ের মৃত্যু একজন মানুষকে গড়তে পারে আবার ভাঙ্গতেও পারে। হ্যারি আর আমাকে শৈশবে মা কষ্ট করে যা শিখিয়েছেন, সেসব ভুলতে চাইনা। আজীবন যুক্ত থাকতে চাই জনকল্যাণে।

ছোট ছেলে হ্যারি বলেন, সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো- যেসব পাপারাজ্জি মায়ের গাড়ির পেছনে ধাওয়া করছিলো, তারাই দুর্ঘটনার পর আহত ডায়ানার ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলো। মাথায় আঘাত পেয়ে গাড়ির পেছনের আসনে কাতরাচ্ছিলেন মা। সাহায্যের হাত না বাড়িয়ে নিজেদের সংবাদের যোগান দিচ্ছিলেন ওই সাংবাদিকরা।

স্বাধীনচেতা মনোভাবের কারণে মাঝেমধ্যেই প্রাসাদে ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে ডায়ানাকে। তার জীবনী-লেখকরা বলছেন, রাজপরিবারের চরিত্রই বদলে দিয়েছিলেন প্রিন্সেস অব ওয়েলস। ডায়ানার জীবনী-লেখক অ্যান্ড্রু মর্টন বলেন, ব্রিটিশ রাজপরিবারের চরিত্র আগের চেয়ে অনেক পাল্টেছে। মূলতঃ ডায়ানার মৃত্যুতে বড় শিক্ষা পেয়েছে বাকিংহাম প্যালেস। রাজপরিবারের সদস্যরা এখন জন-সাধারণের সাথে অনেক বেশি নমনীয়-বন্ধুবৎসল।

ডায়ানা-চার্লস দম্পতির বিচ্ছেদ হয় ১৯৯৬ সালে। পরের বছর ৩১ আগস্ট প্যারিসে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তার। যে দুর্ঘটনাকে ঘিরে থাকা রহস্যের কূলকিনারা হয়নি আজও।

/কিউএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply