আশ্রয়ণ প্রকল্পে দুর্নীতি: ৫ কর্মকর্তা ওএসডি

|

আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণে ২২ জেলায় অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। কোথাও নিম্নমানের উপকরণের ঘর ধসে গেছে, কোথাও স্থান নির্ধারণে হয়েছে দুর্নীতি। প্রকল্পে অনিয়মের সাথে সরকারি কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৮০ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

এরইমধ্যে উপ-সচিব ও ইউএনও পর্যায়ের ৫ কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে। মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পে দুর্নীতির ক্ষেত্রে কোন জেলা প্রশাসকের অবহেলা প্রমাণিত হলে শাস্তি পেতে হবে। অন্যদিকে অভিযোগ সাপেক্ষে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।

মুজিবশতবর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার দুই রুমের ঘর। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৮০ জন ভূমিহীন পেয়েছেন এমন স্বপ্নের ঘর।

জানা গেছে, দরিদ্র ও ভূমিহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে সারাদেশে ২২ জেলার ৩৬ উপজেলায় অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এর সাথে জড়িত হিসেবে নাম এসেছে ১৪৪ সরকারি কর্মকর্তা ও ৩৬ ইউপি চেয়ারম্যানের।

আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিচালক মাহবুব হোসেন জানান, ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনিয়মের খবর বিভিন্ন সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।সবকিছুর তদন্ত চলছে। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ইনক্রিমেন্ট, পদায়ন বন্ধ হবে। অভিযোগ গুরুতর হলে চাকরি থেকে বিদায় নিতে হবে।

এরইমধ্যে ওএসডি হয়েছেন বরগুনার ইউএনও আসাদুজ্জামান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শফিকুল ইসলাম, মুন্সীগঞ্জ সদরের এসিল্যান্ড শেখ মেজবাহ-উল-সাবেরিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবায়েত হায়াত শিপলু এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক লিয়াকত আলী শেখ। এর সাথে কোন জেলা প্রশাসক জড়িত থাকলেও ছাড় পাবে না বলে জানিয়েছেন মুখ্য সচিব।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের শ্লোগান হলো ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’। প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। এর সঙ্গে আমাদের সবার আবেগ জড়িয়ে আছে। তাই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কোনো ধরনের ক্রটিবিচ্যুতি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও শৈথিল্যের ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। অনিয়ম ও অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তি পেতেই হবে। কাউকেই বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না।

প্রকল্প বাস্তবায়নে উপজেলা কমিটিতে ইউএনও, এসিল্যান্ডের পাশাপাশি এলজিইডির প্রকৌশলী ও ইউপি চেয়ারম্যানরাও আছেন। তদন্তে ৩৬ জন ইউপি চেয়ারম্যানের জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, কেউ যদি কোনরকম অনিয়মের সাথে যুক্ত থাকে কিংবা বিধিবহির্ভূত কাজের সাথে সম্পৃক্ত হয় তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

উল্লেখ্য, এ বছরের জানুয়ারিতে প্রায় ৭০ হাজার এবং জুনে ৫০ হাজারের বেশি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি পেয়েছেন ভূমিহীন দরিদ্ররা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply