ভারতীয়দের অপছন্দ, তাই দানিশের লাশ বিকৃত করেছে তালেবানরা

|

পুলিৎজার জয়ী ভারতীয় ফটো সাংবাদিক দানিশ সিদ্দীকি।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তালেবানদের হামলায় নিহত ভারতীয় চিত্রসাংবাদিক দানিশ সিদ্দীকির শেষ মুহূর্তের সাক্ষী আফগান সেনা কমান্ডার বিলাল আহমেদ বলেছেন, তালেবানরা ভারতীয়দের একেবারেই সহ্য করতে পারে না, তাই মৃত্যুর পর দানিশের লাশ বিকৃত করে তারা।

গত বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) আফগানিস্তানের কান্দাহারে আফগান সেনাবাহিনী ও তালেবানদের মুখোমুখি যুদ্ধের মধ্যে পড়ে রাতে প্রাণ হারিয়েছেন কানাডা ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সে কর্মরত পুলিৎজার পদক জয়ী
ভারতীয় ফটো সাংবাদিক দানিশ সিদ্দীকি (৩৮)। মৃত্যুর আগে আফগান সেনাবাহিনীর বিশেষ শাখা আফগান স্পেশাল ফোর্সেস এর সাথে যুদ্ধক্ষেত্রের সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন তিনি।

সেই বাহিনীরই কমান্ডার ছিলেন বিলাল। গত পাঁচ বছর আফগান সেনাবাহিনীর হয়ে কাজ করছেন তিনি। তার দাবি, তালেবানরা যতই অস্বীকার করুক, আসলে তাদের গুলিতেই প্রাণ হারিয়েছেন দানিশ। এবং পুরো ঘটনাটি ঘটেছে তার চোখের সামনেই।

একাধিক গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল দানিশের শরীর, এবং প্রচুর রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় তার- কাবুলে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের দেয়া দানিশের ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা এমনটাই। তবে শুধু গুলি করেই শান্ত হয়নি তালেবানরা। কান্দাহারে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় দানিশের লাশ, এটা অন্তত স্পষ্ট যে মৃত্যুর পর আরও অত্যাচার চালানো হয়েছে দেহটির উপর। প্রত্যক্ষদর্শী কমান্ডার বিলাল তেমনটাই সাক্ষ্য দিচ্ছেন।

কমান্ডার বিলাল বলেন, পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী ওই অঞ্চলে তালেবানের ছোঁড়া গুলিতে কিছুক্ষণের ব্যবধানে প্রাণ হারান দানিশ ও এক আফগান সেনা কমান্ডার। তালেবান কমান্ডাররা দানিশের পরিচয় জানার সাথে সাথে রেগে ওঠে। পরিচয়পত্র থেকে দানিশ ভারতীয় জানতে পেরেই তার দেহটি বিকৃত করার নির্দেশ আসে। নির্দেশ অনুযায়ী দানিশের মাথার ওপর দিয়ে চালিয়ে দেয়া হয় গাড়ি! তার আগেই অবশ্য মৃত্যু হয়েছিল দানিশের। ভারত এবং ভারতীয়দের প্রতি বিশেষ ঘৃণা থেকেই এ কাজ করা হয়েছে বলে দাবি করেন বিলাল।

তবে কমান্ডার বিলাল যা-ই বলুন না কেন, দেহ বিকৃত তো দূরের কথা, দানিশের মৃত্যুর জন্য কোনো দায়ই স্বীকার করেনি তালেবান। ঘটনার পর থেকেই এই দাবিতে অনড় জঙ্গি সংগঠনটি। সম্প্রতি তালেবান মুখপাত্র মওলানা ইউসুফ আহমাদি সংবাদমাধ্যমকে ফোনে বলেন, আমরা ওকে মারিনি। তিনি আমাদের শত্রুপক্ষের সাথে ছিলেন। কোনও সাংবাদিক যদি এখানে এসে থাকেন, তাহলে তার উচিত আমাদের সাথে আগে কথা বলা। আমরা সাংবাদিকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখি।

গত শুক্রবার (১৬ জুলাই) দুপুরে রেডক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির হাতে দানিশের ক্ষতবিক্ষত লাশটি হস্তান্তর করেছিলো তালেবানরাই।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply